গভর্নর বলেন, ‘যখন আমরা রেডি হবো, তখন মাঠে নামবো। আমরা প্রথমে কয়েকটি ব্যাংক নিয়ে কাজ করবো। তারপর কয়েকটি ব্যাংক নিয়ে কাজ করবো। আমরা একবারে সবগুলো তো করতে পারবো না। এভাবে আমরা আগাতে চাই। একেবারে তো সবগুলো করতে পারবো না। আমাদের ক্যাপাসিটি সীমিত। সেজন্য অ্যাকজ্যাক্ট নম্বরটা সেভাবে বলা এখন মুশকিল। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলো নিয়ে একটা করার (প্রথম ধাপ) কথা আমরা চিন্তা করছি। সেটা হবে। কারো কোনো চিন্তা করার কারণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে যেটা আগেই বলা আছে, এগুলো সরকারিকরণ করা হবে। ব্যাংকগুলো গভর্নমেন্ট ব্যাংকে রূপান্তর করা হবে। একেবারে সরকার এটিকে নিয়ে নেবে, অধিগ্রহণ করে নেবে। অধিগ্রহণ করে নিলে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই, থাকাও উচিত না। ডিপোজিটরদের বলবো, আপনাদের চিন্তা করার কারণ নেই। আপনাদের স্বার্থ আমরাই দেখবো।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘৫ আগস্টের পর যে কাজ করা হচ্ছে; সেটার জন্য বিএফআইইউ প্রস্তুত ছিল না। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে লক্ষ্য হচ্ছে সর্বোচ্চ সম্পদ জব্দ করা, আর জোড় করে সর্বোচ্চ টাকা আদায় করা হবে।’
আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসনে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। মানি লন্ডারিং আইনে টাস্কফোর্সকে স্বীকৃতি করা হবে, যাতে আগামীতে অর্থ পাচার আর লুটপাটে দ্রুত কাজ করা সম্ভব হয়—জানান গভর্নর।
আরো পড়ুন:
বিএফআইইউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং, ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতি বছর কয়েক লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয় ব্যাংক ও আর্থিক খাতে। এ অর্থের বড় একটি অংশ দেশ থেকে পাঁচার করা হয়। এর মধ্যে সন্দেহজনক লেনদেনকে নিয়ে তদন্ত করে বিএফআইইউ। তদন্তের ভিত্তিতে নিশ্চিত করা হয় কত টাকা অবৈধ বা দুর্নীতির লেনদেন ও দেশ থেকে পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে গত ১৬ বছরে অবৈধ অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে লেনদেন ও পাচার হয়েছে। শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে এর পরিমাণ বলা হয়েছে ২৮ লাখ কোটি টাকার বেশি। যার বড় অংশ ব্যাংক ও আর্থিক খাত থেকে লুট করেছে এস আলম, সালমান এফ রহমান ও নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা। ফলে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএফআইইউর কাজ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে বলে জানানো হয়।
সংস্থাটির ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এসময় সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ১৭ হাজারের বেশি। এরমধ্যে ব্যাংক খাতে ১৬ হাজার ও গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট রয়েছে ১১৪টি লেনদেন। আলোচ্য অর্থ বছরে ১০ লাখ টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে ২৩ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার।
সংস্থাটি জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ২৫ মে পর্যন্ত সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে ২৭ হাজার ১৩০টি। এক সময় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৪৫০টির বেশি। যা গত বছর থেকে ৪ গুন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৬টি ব্যাংক, নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১২টি ও ১৭টি বীমা কোম্পানি তদন্ত করা হয়। আর এসময় সন্দেহজনক রেমিট্যান্সের তথ্য পাওয়া গেছে ১১৯১টি।