২০২৩ সালে কর ফাঁকি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি

পরিষেবা
অর্থনীতি
0

২০১১ সালের পর থেকে দেশে কর ফাঁকি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছে সিপিডি। কর ফাঁকির কারণে ২০২৩ সালে দুই লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। ২০১২ সালে এই ফাঁকির পরিমাণ ৯৬ হাজার ৫০৩ টাকা কোটি টাকা। আজ (সোমবার, ২১ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিতে গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে সিপিডি। গবেষণায় অংশ নেয়া ৪৫ শতাংশ কোম্পানি জানিয়েছে, করপোরেট কর দেয়ার সময় কর্মকর্তারা ঘুষ চেয়েছেন।

পাঁচ দশক ধরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ-এলডিসি'র তালিকায় বাংলাদেশ। নানা যাচাইবাছাই পেরিয়ে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আরও ভালো প্রস্তুতি নিতে এই সময়সীমা কিছুটা পিছিয়ে দিতে আগ্রহী বাংলাদেশ।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা বলছে, ২০২৩ সালে কর ফাঁকির কারণে আনুমানিক দুই লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আর এই ক্ষতির প্রায় অর্ধেক হয়েছে শুধু করপোরেট কর ফাঁকির কারণে। সকালে সিপিডির কার্যালয়ে 'বাংলাদেশের উত্তরণে করপোরেট আয়কর সংস্কার' শীর্ষক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, ২০১১ সাল থেকে কর ফাঁকির পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এর মূল কারণ উচ্চ কর হার, প্রশাসনিক দুর্বলতা, জটিল ও অস্বচ্ছ আইন-কাঠামো এবং কর ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির বিস্তার। তাই কর ডিজিটাইলেজশন জরুরি বলে মনে করে সিপিডি।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'সকলেই বলছি, আজকে থেকে বলা না। এটা বলার পর বলা চলছেই। কিন্তু এদিকে প্রপার উদ্যোগের অনীহা রয়েছে। এবং আজকে যেটা বেরিয়ে আসলো, এই অনীহা শুধু কর প্রশাসনের থেকে অনীহা না, অনীহা ব্যবসায়ীদের দিকেও রয়েছে। সুতরাং উভয়ের স্বার্থেই আমাদের দরকার হচ্ছে ডিজিলাইজেশনটা বাস্তবায়ন করা।'

এদিকে বাংলাদেশে বিভিন্ন মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু রয়েছে। সিপিডি বলছে, দেশে একক ডিজিটাল ট্রানজেকশন তৈরি করা জরুরি। তাহলে খুব সহজেই গ্রাহকের সব হিসাব রাজস্ব বিভাগ বের করতে পারবে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থিক লেনদেন একটি একক ডিজিটাল সিস্টেমের ভেতর নিয়ে আসতে হবে। যেন যেকোনো ট্রানজেকশন দেশের যেকোনো জায়গায় হোক, সেগুলোকে যে ট্রেস করা যায় এবং তার আলোকে যেন তার রিটার্ন সাবমিশনকে ভেরিফাই করা যায়।'

আরো পড়ুন:

গত সরকারের আমলে এনবিআর থেকে তথ্য পাওয়া দুষ্কর ছিল জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে বলে অভিযোগ করেন সিপিডির।

সিপিডির গবেষক তানিম আহমেদ বলেন, 'আমরা এনবিআরে তথ্য চাইতে গিয়ে আমাদের কাছে ইনফরমাল একটা সাইট দেয়া হয়েছে যেখানে আমরা গিয়ে অন্যভাবে তথ্য নিতে পারি। আমরা চিঠি দেয়ার পর কোনো রেসপন্সও পাইনি। ফলে বোঝা যাচ্ছে আমি যদি ট্যাক্স ফি দিতাম তাহলে আমাকে আসলে কী ফেস করতে হতো। এবং এটা কিন্তু সরকার পতনের পরও এটা আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে।'

বাংলাদেশের রাজস্ব ইনসেন্টিভ পুরোটাই রাজনৈতিক কারণে তৈরি করা বলেও জানান বক্তারা। তাই খাতভিত্তিক ইনসেন্টিভ বাদ দেয়ার আহ্বান তাদের।

এসএস