ডাকসু: কমেছে সভাপতির ক্ষমতা, কাটছে ভোটার-প্রার্থীর বয়সের বাধা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবন
ক্যাম্পাস
শিক্ষা
0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সংশোধিত গঠনতন্ত্রে সভাপতির ক্ষমতা কমানো হয়েছে। আগে ভোটার ও প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ থাকলেও এবার বয়সের বাধা থাকছে না। যদিও এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের। তবে ডাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে নিয়ে এসে ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হবার পর নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচনের বিষয়ে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি। উপাচার্য বলছেন, ডাকসু নির্বাচন জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সম্মান জানানোর একটি বড় সুযোগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ মুহূর্তে আলোচনার তুঙ্গে ছাত্রসংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে গঠনতন্ত্র ও নির্বাচনের আচরণবিধি সংশোধন করেছে পৃথক সংস্কার কমিটি।

পদাধিকারবলে ডাকসুর সভাপতির পদটি নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারণের দাবি জানিয়েছিল কিছু ছাত্র সংগঠন। আবার অনেক সংগঠনের প্রস্তাব ছিল, ডাকসু সভাপতির পদকে আলঙ্কারিক রেখে ক্ষমতায় ভারসাম্য এনে উপাচার্যকেই সভাপতি হিসেবে রাখার। 

তবে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে উপাচার্যকেই সভাপতি রেখে কমানো হয়েছে ক্ষমতা। নতুন করে চারটি সম্পাদকয়ী পদ যুক্ত করা হয়েছে, আর ৩ পদে আনা হয়েছে সমন্বয়।

আগের গঠনতন্ত্রে নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হতে সর্বোচ্চ ৩০ বছর বেঁধে দেয়া হলেও এবার বয়সের বাধা তুলে দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন যেকোনো শিক্ষার্থী ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন। 

এ নিয়ে ছাত্রশিবিরের আপত্তি থাকলেও ছাত্রদল পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হবার পর কতদিনের মধ্যে আবার নির্বাচন করতে হবে তা উল্লেখ নেই আগের গঠনতন্ত্রে। 

ডাকসুকেও একাডেমিক ক্যালেন্ডারে নিয়ে আসার দাবিসহ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রস্তাব ছিল ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের দাবি ছিল ৯০ দিনের মধ্যে। এটি নিয়ে নতুন গঠনতন্ত্রেও কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ক্ষোভ ছাত্রনেতাদের।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ২৫টি পদের বিপরীতে ভোট দিয়েছিলেন ভোটাররা। তবে এবার পদসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮টি। 

বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক’ পদের নাম পরিবর্তন করে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক’ পদ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ‘কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক’কে রিডিং রুম যোগ করে ‘কমন রুম, রিডিং রুম এবং ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক’ করা হয়েছে। 

আগে সাহিত্য সম্পাদক এবং সংস্কৃতি সম্পাদক দু’টি আলাদা পদ ছিল। এখন সেটি ‘সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক’ পদ করা হয়েছে। আর নতুন ৪টি পদ হল— গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক।

তবে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে গঠনতন্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারকেই রাখা হয়েছে আবারো। যদিও অনেক ছাত্র সংগঠনের প্রস্তাব ছিল, ছাত্রদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হবেন কোষাধ্যক্ষ।

তবে যেসব সংস্কারের আরো প্রয়োজন, তা পরবর্তী নির্বাচিত প্যানেল সম্পন্ন করবেন বলে আশাবাদী ইসলামী ছাত্রশিবির।

নির্বাচনের আচরণবিধিও সংস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। যানবাহনের ব্যবহার, প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ, সভা-সমাবেশ ও শোভাযাত্রার নিয়ম, পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ও দেয়াল লিখনের প্রসঙ্গ এবং ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের নিয়মের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া আছে আচরণবিধিতে। 

এসএইচ