জাকসু নির্বাচনে ভোট দেবেন প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী। কেন্দ্রীয় সংসদের সব আসনে প্রার্থী খুঁজে পেলেও হল সংসদ পর্যায়ে প্রার্থী খুঁজতে দ্বিধায় পড়তে হবে ভোটারদের। কেননা ২১টি হলের মোট ৩১৫টি পদের মধ্যে ১৬৫ পদেই হবে না কোনো নির্বাচন।
ছাত্রীদের ১০টি আবাসিক হলের মধ্যে পাঁচটি হলের ভিপি পদে নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। সবচেয়ে করুণ দশা ১৩ নম্বর ছাত্রী হলে। এখানে কোরাম পূর্ণ হওয়ার ন্যুনতম সংখ্যা চার জন প্রার্থীও পাওয়া যায়নি।
সন্তোষজনক প্রার্থী নেই ছাত্রদের হলগুলোতেও। ১১টি হলের মধ্যে অন্তত ছয়টি হলে একাধিক পদে প্রার্থী নেই। আর যেসব পদে ভোট হবে সেসব পদেও নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো আভাস।
কোনো কোনো প্রার্থী মনে করেন, সাইবার বুলিং- এর কারণেই জাকসুর হল সংসদে নারী প্রার্থীদের সংখ্যা অনেক কমেছে।
ছাত্রদল প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী বলেন, ‘আগে যেমন আওয়ামী লীগ কিছু হলেই শিবির ট্যাগ দিতো, খন কোনো নারী অপিনিয়ন দিলেই শাগবাগী ট্যাগ দেয়া হচ্ছে।’
এজিএস প্রার্থী (স্বতন্ত্র) লামিয়া রহমান তৌশী পূর্ণতা বলেন, ‘যদি আমাদের প্রশাসন সুষ্ঠু স্বাভাবিক নির্বাচন পরিচালিত করতে পারে এবং সেখানে যদি কোনো ধরনের রাজনৈতিক দল ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির কোনো বায়াস্টনেস না থাকে। যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন জাবি প্রশাসন উপহার দেয় আমাদের, আর যদি জাকসু নির্বাচন অব্যাহত থাকে তাহলে ভবিষ্যতে প্রার্থীরা আরও বেশি উৎসবমুখর পরিবেশে তারা নির্বাচনের অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী হবে।’
এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কতটুকু উৎসবমুখর হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রার্থীরা। প্রার্থী সংকটে ভোটারের উপস্থিতি কম হওয়ার আশংকাও তৈরি হয়েছে । নির্বাচনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পেছনে নির্বাচন কমিশনের উদাসীনতার অভিযোগ প্রার্থীদের।
আরও পড়ুন:
ছাত্রশিবির প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যে পাওয়ার কথা, সবার জন্য সমান আচরণবিধি প্রয়োগ, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি। সে জায়গায়ও প্রশাসনের অনেক ঘাটতি রয়েছে। সেজন্য প্রশাসনের প্রতি কটা সফট অনাস্থা রয়েছে শিক্ষার্থীদের। সে জায়গা থেকে আমার মনে হয়, হলগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বা গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতায় আগ্রহ হওয়ার জায়গায় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের এ জায়গায় দায় নেয়ার জায়গা রয়েছে।’
জিএস প্রার্থী (স্বতন্ত্র) সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া বলেন, ‘প্রচ্ছন্নভাবেই এমন একটা রেজিমে বড় হয়ে উঠেছে, তারা নির্বাচনকে খানিকটা ভয় পেতে শিখেছিল। ওই জায়গা থেকে কিছু জড়তা এবং আরও কিছু প্রতিবন্ধকতার জন্য এবছর প্রার্থিতার জায়গায় বিশেষ করে নারীরা পিছিয়ে আছেন।’
তবে দায় নিতে নারাজ নির্বাচন কমিশন। বরং দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা ভোট দেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না, এমন আশায় আছেন কমিশনের দায়িত্বশীলরা।
জাকসু নির্বাচন-২০২৫ এর প্রক্টর ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আসলে আমাদের দেশের যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং জাকসুর যে গঠনতন্ত্র আছে সেটাতে এখন পর্যন্ত কতটুকু ভোট হলো সেটার চেয়ে অংশগ্রহণ কতটুকু হলো সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি বেশিরভাগ ভোট কাস্টিং হবে।’
নির্বাচন জমজমাট করতে প্রার্থীদের নিয়ে নানা উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও আশ্বাস নির্বাচন কমিশনের।