বন্যা-ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত বিশ্ব: ভারতে ৮৫, টেক্সাসে ১২০ জনের মৃত্যু

গুয়াতেমালায় ভূমিকম্প ও আফটার শকের আতঙ্কে তাঁবুতে  রাত কাটাচ্ছেন অধিবাসীরা
বিদেশে এখন
পরিবেশ ও জলবায়ু
0

বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে। ভারতের হিমাচল প্রদেশে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮৫ জনের। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২০ জন। নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যেও একই ধরনের বন্যায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের। গুয়াতেমালায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪ জন। এর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সেখানে দেড় শতাধিক আফটার শক (পরাঘাত) অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

বর্ষা আগমনের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ভারতের উত্তরাঞ্চল। দেশটির ১৭টি নদীর পানি বইছে বিপৎসীমার উপরে। এতে ভয়ংর রূপ ধারণ করেছে হিমাচলের বন্যা।

ভবন ও পাহাড়ধসে রাজ্যটিতে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে প্রাণহানি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। রাজ্যটির অধিকাংশ এলাকায় জারি করা হয়েছে ইয়েলো অ্যালার্ট। ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক ৮০০ কোটি রুপি ছাড়ানোর শঙ্কা মুখ্যমন্ত্রীর।

আসামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত দিল্লি। রাজধানীর অধিকাংশ সড়কে এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। এতে তৈরি হয় ট্রাফিকের দীর্ঘ সারি। হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হওয়ায় উত্তর ভারতে আরও কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বন্যায় এখনো প্রাণহানি বাড়ছেই। অনেকেই বাড়ি ফিরে দেখছেন অবশিষ্ট নেই কিছুই। চলছে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজ। সাহায্য করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।

নিউ মেক্সিকোর পরিস্থিতিও একইরকম। ভয়াবহ বন্যার রেশ কাটার পর দেখা মিলছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র।

স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, আমি দোতলায় ছিলাম। যখন দেখলাম পানি আগের বছরের উচ্চতা ছাড়িয়ে গেছে, তখনই আমার কুকুরকে নিয়ে পাহাড়ে চলে গেলাম।

স্বেচ্ছাসেবী একজন বলেন, আমার সম্প্রদায়কে যতটুকু পারছি সহায়তা করছি। তাদের সাহায্যের জন্য আমি পাশে রয়েছি।

ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির সড়ক। অন্যদিকে ম্যারিল্যান্ডে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড়।

ভয় আর আতঙ্কে পুরো রাত কেটেছে তাঁবুতে। ভোরের আলো ফোঁটার পরেও তাঁবু ছাড়ার সাহস করছেন না কেউই। কারণ গুয়াতেমালায় মাত্র এক দিনে দেড় শতাধিক ভূমিকম্প ও আফটার শকে ধসে পড়েছে বিভিন্ন ভবন। কংক্রিটের স্থাপনায় ধরেছে ফাটল।

স্থানীয়রা বলেন, সন্তানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্যেই খোলা মাঠে এসেছিলাম। কিন্তু ঘুম আসেনি। কারণ একের পর এক আফটার শক আমাদের ঘুমাতে দেয়নি। সারা রাত ভয়ে কাটিয়েছি। এখনো আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছি। জানি না কেনো এমন হচ্ছে। তবে ভূমিকম্প আমাদের মনোবল নাড়িয়ে দিয়েছে।

মধ্য আমেরিকার দেশটিতে বুধবার অনুভূত হয় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প। এসময় ভবন ও পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। নিখোঁজদের সন্ধানে দুর্গম অঞ্চলে চলছে উদ্ধারকাজ। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ইএ