যুক্তরাজ্যজুড়ে বেড়েছে অপরাধ প্রবণতা; ঝুঁকিতে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা

যুক্তরাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তা
প্রবাস
0

যুক্তরাজ্যজুড়ে খুন, চুরি, ছিনতাই, মাদকসহ নানা অপরাধ বেড়েছে ব্যাপক হারে। এসব অপরাধে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোও রয়েছে ঝুঁকিতে। বাজেট ঘাটতি, জনবল সংকটে, অপরাধ দমনে উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ। সমাধানের পথ খুঁজছে স্থানীয় কাউন্সিল ও পুলিশ।

যুক্তরাজ্যজুড়ে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে অপরাধ প্রবণতা। সম্প্রতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্বেতাঙ্গ প্রতিবেশীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন ইস্ট লন্ডনের নিউহাম বারার ব্রিটিশ বাংলাদেশি রইস উদ্দিন। প্রত্যক্ষদর্শী রাজ হাসান বলেন, এটা ছিলো পূর্বপরিকল্পিত হত্যা। তিনিও সেই বিকেলে আক্রমণের শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শী রাজ হাসান বলেন, ‘আমি এসে থামানোর চেষ্টা করি। তার হাতে ছুরি ছিলো। ছুরি দিয়ে ঠিক চোখের মাঝে আঘাত করা হয়েছে।’

খুন, নাইফ ক্রাইম, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ এখন খুব স্বাভাবিক বিষয়। ব্রিটিশ বাংলাদেশি তরুণদের বড় অংশ গ্যাং ক্রাইম ও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিককালে এসব অপরাধের মাত্রা ভয়ংকরভাবে বেড়েছে। শুধু লন্ডনেই প্রতি সাত মিনিটে একটি মোবাইল চুরি হচ্ছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন:

২০২৪ সালের হিসেব অনুযায়ী ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে প্রায় ৬ মিলিয়ন অপরাধ রেকর্ড করা হয়। এরমধ্যে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে শুধু লন্ডনে মোট ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬৮টি অপরাধ রেকর্ড করা হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ অপরাধ হয় ইংল্যান্ডে, যেখানে প্রতি এক হাজার জনে ৮৪ জনই অপরাধে জড়িত। বাড়ছে ছোট ছোট অপরাধও। এতে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ।

চাকচিক্যের আড়ালে অপরাধের অভয়ারণ্য হয়ে উঠছে লন্ডন। মেট পুলিশ ও ওএনেসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংগঠিত হওয়া লন্ডনের ৩৩টি বরোর মধ্যে প্রথম স্থানে আছে ওয়েস্টমিনিস্টার প্যালেস আর টপ এইটে আছে বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরাধ কমাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা।

টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলর সেইফার কমিউনিটি কেবিনেট মেম্বার আবু তালহা চৌধুরী বলেন, ‘এবছর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে আমরা দেখছি ২০ শতাংশের বেশি অপরাধ বেড়েছে। এসব বিষয় আমাদের জন্য আসলেই অনেক দুঃখজনক।’

লন্ডনে অপরাধ দমনে প্রয়োজন ৩৮ হাজার পুলিশ ও ১৯ হাজার সহকারী কর্মী। উল্টো ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ড বাজেট ঘাটতিতে ২০২৫-২৬ সালে আরও প্রায় তিন হাজার স্টাফ কমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কাউন্সিলরগুলো নানা উদ্যোগ নিলেও এর কার্যকর ফল পেতে সময় লাগবে বলছে কর্তৃপক্ষ।

এত অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পরও সমাধান হয়েছে মাত্র ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়ে, গেলো বছর বাদ দেওয়া হয়েছিল আড়াই মিলিয়ন মামলা। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার টিরও বেশি মামলার তদন্তই করা হয়নি।

এফএস