রহস্যময় ‘হৃৎস্পন্দন’; প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একবার স্পন্দিত হচ্ছে পৃথিবী

প্রতীকী ছবি
তথ্য-প্রযুক্তি
0

শান্তভাবে ও ছন্দের দোলায় স্পন্দিত হচ্ছে পৃথিবী। আমাদের পায়ের নিচেই কোথাও হচ্ছে এ স্পন্দন। এমনটাই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এ মৃদু কম্পন মানুষের পক্ষে অনুভব করা অসম্ভব। এ রহস্যময় ‘হৃৎস্পন্দনের’ অস্তিত্ব টের পায় বিভিন্ন মহাদেশজুড়ে রাখা সিসমোমিটার। কেন হচ্ছে এ স্পন্দন?

প্রায় ছয় দশক ধরে বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে আসছেন এক অদ্ভুত ঘটনা। প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একবার স্পন্দিত হচ্ছে পৃথিবী। এ রহস্যময় ভূকম্পন বিশ্বের বিভিন্ন সিসমোগ্রাফে ধরা পড়লেও আজ পর্যন্ত কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি এ পৃথিবীর হৃৎস্পন্দনের উৎস কী?

এ নির্দিষ্ট সময় অন্তর ঠিক ২৬ সেকেন্ড পরপর দুর্বল কিন্তু স্পষ্ট একটি সিসমিক সিগন্যাল পাওয়া যায়। প্রথম এ ঘটনা শনাক্ত হয় ১৯৬০-এর দশকে। এরপর থেকে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে। কিন্তু এ ভূকম্পনের কারণ এখনো অজানা। বিজ্ঞানীরা একে কখনো ‘মাইক্রোসিসম’ আবার কখনো ‘পালস’ বলে থাকেন।

এ ভূকম্পনটির উৎস আফ্রিকার উপকূলবর্তী গিনির উপসাগরের একটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে বলে সবচেয়ে বেশি ধারণা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট ভূকম্পন কেন্দ্র থেকে প্রতি ২৬ সেকেন্ডে এ সিগন্যাল ছড়াচ্ছে বলে মনে করা হয়।

আরও পড়ুন:

আরেকটি গবেষণায় বলা হয় এ পালসটি সমুদ্রতলের ঢেউ ও ভূতাত্ত্বিক গঠন মিলে তৈরি করতে পারে। অর্থাৎ যখন সমুদ্রের ঢেউ নির্দিষ্টভাবে উপকূলে আঘাত হানে এবং ভূমির নিচে নির্দিষ্ট কাঠামোর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তখন এ ধরনের নিয়মিত কম্পন তৈরি হতে পারে। তবে অন্য বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটি হয়তো ভলকানিক কোনো গতিবিধির ফল হতে পারে বা আরও গভীর ভূত্বকের কোনো প্রাকৃতিক চক্রের প্রতিফলনও হতে পারে।

এ ভূকম্পন খুবই দুর্বল তাই এটি সাধারণ ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ যন্ত্রে সবসময় ধরা পড়ে না। তাছাড়া এটি ক্ষয়ক্ষতি করে না তাই অধিকাংশ সময় এটি গবেষকদের নজরের বাইরে থাকে। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, যেহেতু এটি ক্ষতিকর নয় এবং একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ, তাই এটি প্রাকৃতিক ছন্দ যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে।

বর্তমান প্রযুক্তি এবং ডাটা অ্যানালিটিক্সের অগ্রগতির ফলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, আগামী বছরগুলোতে এ রহস্যের পর্দাফাঁস করা সম্ভব হবে। পৃথিবীর গভীরতর স্তরের অজানা তথ্য জানতে এটি হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবী আমাদের কিছু বলার চেষ্টা করছে যা আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি।

এফএস