গাজা, ইয়েমেন, লেবানন ও সিরিয়ায় একযোগে বিমান হামলা ইসরাইলের

বিমান হামলা ইসরাইলের
বিদেশে এখন
0

একইদিনে গাজা, ইয়েমেন, লেবানন ও সিরিয়ায় একযোগে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালালো ইসরাইল। এতে গাজায় একদিনেই নতুন করে নিহত হয়েছেন ৫৪ ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে, ইসরাইলের বেন গুরিওন বিমানবন্দরে হুতিদের মিসাইল হামলার প্রতিবাদে এদিন ৩০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে ইয়েমেনের হুদাইদা বন্দরে ভয়াবহ হামলা চালায় তেল আবিব। এছাড়াও, হিজবুল্লাহ অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে লেবাননেও অভিযান চালিয়েছে তারা। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই আগামী সপ্তাহে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইসরাইলের বেন গুরিওন বিমানবন্দরে ইয়েমেনি হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর থেকেই এর পাল্টা জবাব দিতে ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে ওঠেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। এরই জেরে সোমবার একযোগে মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশে হামলা নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। গাজা, ইয়েমেন, লেবানন ও সিরিয়াতে তাণ্ডব চালিয়ে হুতিদের হামলার প্রতিশোধ নিচ্ছে তারা।

সোমবার (৫ মে) রাতে ইয়েমেনের হুদেইদাহ বন্দরে একযোগে ৩০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে তাণ্ডব চালায় ইসরাইল। এসময় গোটা বন্দর এলাকা ঘিরে ফেলে বিমানগুলো। এতে সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ আগুন ধরে যায়।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘নামাজ পড়ছিলাম। সেসময় বিকট শব্দে বিমান উড়ে যায়। আমার ছেলে ও ভাই ভেতরে ছিল। নামাজ বাদ দিয়ে বাইরে চলে আসি।’

আরেকজন বলেন, ‘অনেকেই শহীদ হয়েছেন। অনেকে আবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অনেকেই আবার আগুনে দগ্ধ হয়েছে।’

ইসরাইলে ইরান সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর গাজায় আগ্রাসন বাড়াবে তারা, একাধিকবার এমন ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। এতে গাজা থেকে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি অন্যত্র চলে যাবে বলেও জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই যে ইসরাইলি সেনারা পিছু হটবে না। গাজার বিভিন্ন অঞ্চল দখলে আমরা রিজার্ভ সেনা মোতায়েন করবো। দখলের পর তাদের চলে যেতে বলবো। আমাদের উদ্দেশ্য যদিও এমন নয়, তবুও এর বিপরীত পরিস্থিতি ঘটতে যাচ্ছে।’

ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মরটিচ বলেন, ‘গাজার পুরো অঞ্চল আমরা দখল করবো। বিষয়টি পরিষ্কার। এক বছর কিংবা ৬ মাস পর এ অঞ্চলের মানবিক সহায়তার ভারও আমরা নেবো যাতে হামাস কোন কৌশলে অস্ত্র সহায়তা না পায়। সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে হামাসকে আলাদা করবো। হামাসকে নির্মূল করবো। এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনবো।’

হামাস ও হুতিদের পাশাপাশি এবার ইরান সমর্থিত আরেক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ওপরও হামলা চালিয়েছে আইডিএফের সেনারা। একইদিন হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে লেবাননের বেকা উপত্যকায় অভিযান চালায় তারা।

ইয়েমেনে ইসরাইল ও মার্কিন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসকে চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে নিন্দা জানান জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত। এতে বলা হয়, ইয়েমেনের সার্বভৌমত্বে আঘাতের দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকেই নিতে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আগামী সপ্তাহে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সেজু