মৃত্যু যেখানে অবধারিত, সেখানে বেঁচে থাকাটাই বিস্ময়। যে উপত্যকায় প্রতিদিন শত শত মানুষের প্রাণ যায়, ক্ষুধার জ্বালায় পোষ্য প্রাণির খাবারে ভাগ বসায় অসহায় শিশু, সেখানে মৃত্যু একটি পরিসংখ্যান মাত্র।
এবার অবরুদ্ধ উপত্যকার নিহতদের তালিকায় যোগ হলো আরেকটি শিশুর নাম। ক্ষুধার সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে অবশেষে প্রাণ গেল ৪ বছরের শিশু মোহাম্মদ মুস্তাফা ইয়াসিনের।
গেল ১১ সপ্তাহ ধরে বুলেট-বোমা বাদ দিয়ে ক্ষুধা নামক এক অস্ত্র দিয়ে গাজাকে জনশূন্য করে দেয়ার এক নোংরা খেলায় মেতেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। তার বীভৎস এই নীতির শিকার হয়ে না খেয়ে এরইমধ্যে প্রাণ গেছে অর্ধশত শিশুর। উপত্যকার প্রতি ৫ জনের এক জন ভুগছে পুষ্টিহীনতায়। আর ২০ লাখ ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য ১১ মাস পর মাত্র ১০০টি ত্রাণের ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে দিয়ে প্রহসনই করছেন নেতানিয়াহু।
সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য বলছে, গাজায় নিহত শিশুদের ৩০ শতাংশই মারা গেছে ক্ষুধার যন্ত্রণায়। এরমধ্যে নবজাতকের সংখ্যা সাড়ে ৭০০। আর এখনও মৃত্যুর কারণ শনাক্ত হয়নি এমন শিশুর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের তুলনায় গাজা উপত্যকা শিশুদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ জায়গা।
এদিকে, গেল শুক্রবার খান ইউনিসের দু'জন চিকিৎসকের বাড়িতে হামলা চালায় ইসরাইল। এতে এক নারী চিকিৎসকের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই নিহত হয়। যদিও কেন এই হামলা বা এর লক্ষ্যবস্তু কী ছিল এ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যাই দেয়নি ইসরাইলি সেনাবাহিনী। শুধু জানানো হয়েছে হামলার কারণ পর্যালোচনা করছে আইডিএফ।
একরাতের ব্যবধানে ১০টি শিশুর প্রাণ কেড়ে নিলো ইসরাইলি সেনারা। বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা হলেও এ নিয়ে এখনও মুখ খুলছেন না পশ্চিমা কোনো দেশের সরকার । তাই হামলার কারণ পর্যালোচনার অজুহাত দিয়ে গাজায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহু বাহিনী। তোয়াক্কা করতে হচ্ছে না কোনো আইন বা বিধিনিষেধের।