বন্দিবিনিময়ের মধ্যেও টানা দু'রাত ধরে রুশ বাহিনী আক্রমণের মাত্রা বাড়ানোয় এভাবেই মাটির নিচে থাকা একটি রেল স্টেশনে আশ্রয় নেন হাজার হাজার ইউক্রেনীয়। সিঁড়ি ও মেঝেতে শুয়ে-বসে আরেকটি নির্ঘুম রাত পার করেন তারা।
ততক্ষণে রোববার রাতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও বিমান হামলায় কেঁপে ওঠে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, দক্ষিণের মাইকোলাইভ এবং পশ্চিমের টেরনোপিলসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানো হয় সবচেয়ে বেশি। এতে হতাহতের শিকার হয়েছে বেশ কয়েকজন। একাধিক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বেসামরিক স্থাপনা।
বন্দিবিনিময় শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালালেও রাজধানী কিয়েভকে মূল লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর। যার কারণে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে রাজধানীতে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে।
পাশাপাশি রোববার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কিয়েভে আরো আক্রমণাত্মক রুশ হামলা শঙ্কা করছে ইউক্রেন। এ অবস্থায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে আরও চাপ দিতে মিত্রদের প্রতি আহ্বান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘মিত্র রাষ্ট্রগুলোর যৌথ প্রচেষ্টা আমাদের জন্য খুবই জরুরি। কারণ যুদ্ধবিরতি কোনও সহজ কাজ নয়। তবে এটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বজুড়ে যারা আমাদের সাহায্য করছেন তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি আশা করবো আমাদের অংশীদাররা এই কঠিন কাজে আমাদের সমর্থন করে যাবেন। এর অংশ হিসেব রুশ প্রেসিডেন্টকে চাপ দেয়া অব্যাহত রাখবেন।’
এদিকে, ১৬ মে ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি হওয়ার পর শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে রোববার তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে বন্দিবিনিময় কার্যক্রম। দীর্ঘদিন পর মাতৃভূমিতে পা রেখে অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের কাছে পাওয়ায় তৈরি হচ্ছে আবেগ ঘন মুহূর্ত।
রোববার উভয়পক্ষের বন্দিবিনিময়ের সংখ্যা এক হাজারে গিয়ে ঠেকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের মধ্যে এটিই কিয়েভ এবং মস্কোর সবচেয়ে বড় বন্দী বিনিময়। এই বন্দিবিনিময় শেষে ইউক্রেনের কাছে একটি খসড়া শান্তিচুক্তি হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।