বদলে গেছে তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজমির প্রদেশের চেহারা। আগুনের লেলিহান শিখায় কমলা-হলুদ রঙে ছেয়ে গেছে গোটা অঞ্চল, যেন কোনো সিনেমার দৃশ্য এটি।
৭ দিন ধরে চলমান এই দাবানলের কারণ অনুসন্ধানে যখন তুরস্কের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাজেহাল দশা তখন দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নি সংযোগের দাবি করছে কুর্দি সমর্থিত একটি অখ্যাত সংগঠন, চিলড্রেন অব ফায়ার। যদিও মূল দাবানলের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা আছে কী না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দাবানল এখনও নিয়ন্ত্রণে না আসায় ৫০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন ইজমির মেয়র চেমিল তুগে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু বলছে, হেলিকপ্টার ও বিমান থেকে ক্রমাগত পানি ছেটানো হলেও তীব্র তাপপ্রবাহ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম। বন্ধ রাখা হয়েছে ইজমি থেকে সেসমের পর্যটন এলাকাগুলোতে যাওয়ার সড়কপথ।
আনাদোলুর আরও নিশ্চিত করেছে, গেল বৃহস্পতিবার নতুন করে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ আন্টালিয়া এবং বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলের বাইরের কয়েকটি বিস্তীর্ণ এলাকায়।
দাবানল পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে গ্রিসেও। শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল থেকে রাজধানী এথেন্সের দাবানল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় দমকল বিভাগ। ৫টি রাজ্যে জারি হয়েছে উচ্চ দাবানল সতর্কতা। ক্যাটাগরি ৪ এর ঝুঁকিতে থাকা এই অঞ্চলগুলো থেকে এরই মধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৫ হাজার বাসিন্দা ও পর্যটককে।
এত দ্রুত দাবানলটি ছড়িয়ে পড়ছে যে, এথেন্সের বিমানবন্দর থেকেও দেখা যাচ্ছে আগুনের ধোঁয়া। এছাড়াও দাবানল সতর্কতা জারি থাকায় চলতি মাসে ফসলের উচ্ছিষ্ট ও ক্ষেত পোড়ানো নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন।
এদিকে, প্রথম দফার পর দ্বিতীয় তাপপ্রবাহের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপবাসী। প্রচণ্ড গরমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
উত্তর গোলার্ধে বছরের উষ্ণতম মাস জুলাই আসার আগে যেভাবে স্পেন ও পর্তুগালে উষ্ণতম জুনের রেকর্ড ছাড়াচ্ছে, তাতে করে দ্বিতীয় ধাপে এই দাবদাহ আরও বেশি স্থায়িত্ব নিয়ে ফিরে এলে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে শঙ্কায় ইউরোপের বাসিন্দারা। এমনকি কোথাও কোথাও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ করে দিতে হতে পারে কর্তৃপক্ষকে।