মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ১২ ইঞ্চির বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে গুয়াদালুপ নদীর পানি বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পায়। মাত্র ৪৫ মিনিটে নদীর পানি ২৬ ফুট উপরে উঠে যায়। যা ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, এমনকি ১৯৮৭ সালের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
এসময় ক্যাম্প মিস্টিক নামের একটি গ্রীষ্মকালীন শিবিরে অবস্থান করছিলেন প্রায় ৭৫০ জন ক্যাম্পার। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন ২৩ জন। তবে টেক্সাসের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত গভর্নর লেফটেন্যান্ট ড্যান প্যাট্রিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নিখোঁজ মানেই সবাই হারিয়ে গেছে এমনটা নয়। তারা আশপাশের গাছে আশ্রয় নিতে পারে বা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে পারে। আমরা প্রার্থনা করছি, যেন সবাই নিরাপদে থাকে।’
ক্যাম্প মিস্টিক কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে অভিভাবকদের জানিয়েছে, ‘যদি আপনার সন্তান নিখোঁজ থাকে, আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে জানানো হবে। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তারা সবাই নিরাপদে রয়েছে।’
এদিকে বন্যা যখন আঘাত হানে, বেশিরভাগ মানুষ তখন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। কারভিল শহরের মেয়র জো হেরিং আবেগপ্রবণ হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের কমিউনিটির জন্য প্রার্থনা করুন।’
শুক্রবার সকালেই ডজনখানেক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কার কাউন্টির জজ রব কেলি। এখনও উদ্ধার অভিযান চলমান বলেও জানান তিনি।
এক প্রত্যক্ষদর্শী ক্যাম্পার কেটি বলেন, ‘রাত ২টার দিকে বন্যার সতর্কতা আসলেও তখনও নদীর পানি অনেক দূরে ছিল। তাই আমরা ভাবিনি পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতে পারে। কিন্তু ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ কেউ আরভির দরজায় ধাক্কা দিয়ে চিৎকার করে বেরিয়ে যেতে বললেন। গুয়াদালুপ নদী তখনই ভয়াবহভাবে উঠে আসে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত বাচ্চাদের গাড়িতে তুলি, এবং প্রয়োজনে ক্যাম্পারটি ফেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ভাগ্য ভালো, ক্যাম্পার নিয়েই বের হতে পেরেছিলাম। নদীর পানি তখন ক্যাম্পসাইটের একেবারে পেছনে এসে গিয়েছিল, আর গর্জন করছিল। গাছ ভাঙার আওয়াজ হচ্ছিল। সত্যিই ভয়ের মুহূর্ত ছিল। তবে পার্ক কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে সবাইকে জাগিয়ে তুলেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ।’
বন্যার সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রবল স্রোতে গাড়িগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে এবং কেবিনগুলো প্রায় ডুবে গেছে। জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সবাইকে সতর্ক করেছে এবং গুয়াদালুপ নদী ও আশপাশের বাসিন্দাদের দ্রুত উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।