কানাডা থেকে আমদানি পণ্যে ৩৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিদেশে এখন
0

কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা আগামী পহেলা আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদার বেশিরভাগ দেশের ওপরই ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। এছাড়া, বিশ্বজুড়ে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে বসবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) নিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক চিঠিতে ট্রাম্প কানাডার ওপর ওই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।

কানাডার অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার মোট রপ্তানির ৭৬ শতাংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় বসেই বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক ধার্য করা শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশসহ ২০টির বেশি দেশকে চিঠি পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এবার কানাডার ঘাড়ে অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। ট্রুথ সোশ্যালে কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘মাদক পাচার রোধে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করলে শুল্কের বিষয়ে ছাড় দেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার এবং বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে কানাডার ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যদিও, মার্কিন সীমান্ত কর্তৃপক্ষ বলছে, কানাডা সীমান্ত দিয়ে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মাদক পাচার হয়। বাকি পুরোটাই আসে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে। এরইমধ্যে কানাডীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য আছে। এছাড়া, উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় পাবে কানাডা।’

এ বিষয়ে কার্যকর সমঝোতা করার আশ্বাস দিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানিয়েছেন, বাণিজ্য ও শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কার্যকর সমঝোতায় আসার সুযোগ আছে। কানাডার জনগণ ও ব্যবসায়ীদের ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানান তিনি। তবে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে রেখেছেন, কানাডা পাল্টা শুল্কারোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রও শুল্কের হার আরও বাড়াবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কারোপের কথাও বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে অন্য দেশের কোম্পানিগুলো যদি মার্কিন ভূখণ্ডে পণ্য উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেসব দেশ শুল্ক থেকে মুক্তি পাবে।

এছাড়া বিশ্বজুড়ে তামা, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি নয় এমন সব ধরনের গাড়ি ও ট্রাকের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। যা আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

এদিকে, ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণায় সাও পাওলো শহরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছে শত শত মানুষ। এ সময় ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষোভকারীরা।

তারা বলেন, ‘ব্রাজিল অন্যান্য দেশের সঙ্গেও ব্যবসা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বুঝা উচিত এভাবে শুল্কারোপ করা কোনভাবেই ঠিক না। ট্রাম্প শুল্কারোপ করে ব্রাজিলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছেন। কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই তিনি শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপরও নতুন করে শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ওয়াশিংটন। শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপে মন্দায় পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতি।

ইএ