যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের মসনদে বসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কয়েকটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তার মধ্যে অন্যতম অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণহারে বিতাড়িত করা। সেই উদ্দেশে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেসসহ দেশটির বড় বড় শহর থেকে এরইমধ্যে অনেক অভিবাসীদের ধরে নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে।
এর প্রতিবাদে গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন ট্রাম্প। তার অভিবাসন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে অভিবাসীসহ খোদ মার্কিনরাও। বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থানে যায় ট্রাম্প প্রশাসন। ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ডসহ বিপুলসংখ্যক নৌবাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
এমনকি নথিপত্রবিহীন অভিবাসীর সন্তানদের জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্বের সাংবিধানিক অধিকার বাতিলের নির্দেশও দেন ট্রাম্প। এতে চরম ক্ষোভ দেখা দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। অপরদিকে অভিবাসীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ। স্কুল, কলেজ, অফিস সব জায়গায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে।
এ পরিস্থিতিতিতে অভিবাসীদের ওপর চড়াও হওয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেন ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালত। অভিবাসীদের যুক্তিতর্ক শোনার পর ঐ মামলার রায়ে এবার কোন প্রমাণ ছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেসের অভিবাসীদের ধরপাকড় না করার নির্দেশ দিলেন আদালত। শুক্রবার এ নির্দেশ দেওয়া হয়। মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের সংবিধান বহির্ভূত আটক বন্ধ করতেই আদালতের এ নির্দেশ।
অভিবাসীদের পক্ষের আইনজীবীদের একজন রেবেকা ব্রাউন বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের বিষয়টি আদালতের কাছে তুলে ধরেছি। যারা এখনও আটক রয়েছে তাদের হয়ে কথা বলেছি। এছাড়াও কারণ ছাড়া সরকার যেন সাধারণ মানুষকে বন্দি করা বন্ধ করে সে বিষয়ে আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’
সরকার পক্ষের আইনজীবীদের মোহাম্মদ তাজসার বলেন, ‘ফেডারেল আদালতের কাছে এমন কিছু তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেছি যে আদালতের আর কিছুই বলার ছিল না। অবৈধ অভিবাসীরা আইন মানতে বাধ্য নয়।’
তবে এ মামলার বাদীর অভিযোগ, সংবিধান বহির্ভূত হয়ে অবৈধভাবে অভিবাসীদের আটক করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
আদালতের এ নির্দেশ ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসসহ ৭ টি কাউন্টির জন্য প্রযোজ্য হবে।