এক বছর আগে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতায় আসে লেবার পার্টি। তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটারদের বয়সসীমা কমানোর প্রতিশ্রুতি ছিল। যদিও, সম্প্রতি দলটির জনপ্রিয়তা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
এবার ভোটারদের বয়সসীমা কমিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল ব্রিটিশ সরকার। ১৬ এবং ১৭ বছর বয়সীদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। যারা ২০২৯ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। তবে স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের স্থানীয় নির্বাচনে এরইমধ্যে ১৬ বছর বয়সীরা ভোট দেন।
প্রস্তাবটি এখন পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায়। ব্রিটিশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির তরুণ সমাজ। তাদের মতে, এর মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর জনসাধারণের আস্থা বাড়বে।
তরুণদের মতামত জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমার মতে বর্তমানে অল্প বয়স থেকেই খুব দৃঢ় মতামত দেয়ার ক্ষমতা রাখে সবাই। এ বয়সী মানুষের মতামতের গুরুত্ব দেয়া উচিত। এমন সিদ্ধান্তে আমি অনেক খুশি। এ বয়সে তারা বাবা মায়ের মতামতেই চলে। তবে এবার তাদের মতামত প্রতিষ্ঠার সুযোগ হয়েছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে উদ্যোগ নেয়া হলেও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ও ভুল তথ্য থেকে তাদেরকে দূরে রাখতে তরুণ ভোটারদের সঠিক নির্দেশনা দিতে হবে। তরুণ প্রজন্মের মতামত দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে বলেও মত অনেকের।
তারা বলেন, ‘সত্যিই ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজকের যুক্তরাজ্যের সমস্যা মোকাবেলায় তরুণ প্রজন্মের মতামত নেয়া খুব জরুরি। ভবিষ্যতে তরুণদের আরও বলার সুযোগ আসবে। তাদের সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও চাকরি খাতে।’
সরকারি তথ্য মতে, যুক্তরাজ্যে ১৬ ও ১৭ বছর বয়সী তরুণের সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ। সংস্কারের আওতায় যুক্তরাজ্যে ইস্যু করা ব্যাংক কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ভোটার পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে তরুণরা।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভোটদানের বয়স কমানোর ফলে নির্বাচনী ফলাফলে খুব একটা প্রভাব পড়ে না। তবে ১৮ বছর বয়সীদের চেয়ে ১৬ বছর বয়সীদের ভোট দেয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যুক্তরাজ্যে ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০০১ সালের পর সর্বনিম্ন।