শুল্কমুক্ত সুবিধা ‘ডি মিনিমিস’ বাতিল: বাংলাদেশের ই-কমার্স রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিদেশে এখন
0

যুক্তরাষ্ট্র সরকার স্বল্পমূল্যের পণ্যের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলা শুল্কমুক্ত সুবিধা ‘ডি মিনিমিস’ বাতিল করেছে। বুধবার (৩০ জুলাই) হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে এই সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বিশেষ করে চীন, হংকং এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর স্বল্পমূল্যের ই-কমার্স রপ্তানিতে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের পোশাক, হস্তশিল্প ও হালকা ইলেকট্রনিক পণ্য আমেরিকান বাজারে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পৌঁছাতো। এখন এসব পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সিদ্ধান্তটি কার্যকর হবে আগামী ২৯ আগস্ট থেকে। এতে করে আন্তর্জাতিক ডাক সেবার বাইরের, ৮০০ ডলার বা তার কম মূল্যের যেসব প্যাকেজ যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়, সেগুলোর ওপর এখন থেকে সব ধরনের প্রযোজ্য শুল্ক আরোপ করা হবে।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, নতুন আইন ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট (ওবিবিবিআ) অনুযায়ী ২০২৭ সালের ১ জুলাই থেকে এই সুবিধা আইনগতভাবে বাতিল হওয়ার কথা থাকলেও, ট্রাম্প জরুরি পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়ে তা আগেভাগেই কার্যকর করছেন।

বর্তমানে ডাক ব্যবস্থার মাধ্যমে পাঠানো পণ্যগুলো উৎস দেশ অনুযায়ী শতকরা হারে শুল্ক অথবা সাময়িকভাবে ছয় মাসের জন্য ৮০ থেকে ২০০ ডলারের নির্দিষ্ট শুল্কের আওতায় পড়বে, যা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট দেশের শুল্কনীতির ওপর।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে যেখানে মাত্র ১৩৪ মিলিয়ন ডি মিনিমিস প্যাকেজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতো, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৩৬ বিলিয়নে। বর্তমানে দিনে গড়ে ৪ মিলিয়ন প্যাকেজ কাস্টমস প্রক্রিয়াকরণের মধ্য দিয়ে যায়।

এ মাসেই এক রিপোর্টে রয়টার্স জানিয়েছে, চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের পর এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানপথে পণ্য পরিবহন ১০.৭ শতাংশ কমেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ২ মে থেকে চীন ও হংকং থেকে আসা পণ্যে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে, যা পরবর্তীতে এক সাময়িক বাণিজ্য সমঝোতার পর ৩০ শতাংশে নামানো হয়।

এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে রিপাবলিকান সিনেটর জিম ব্যাংকস বলেন, ‘চীনের মতো দেশগুলো এতদিন শুল্ক ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সস্তা পণ্য ঢোকাচ্ছিল। এটা আমেরিকান ব্যবসার জন্য হুমকি ছিল।’

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ই-কমার্স কোম্পানিগুলোকে এখন তাদের পণ্যের মূল্য কাঠামো নতুনভাবে ভাবতে হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত রপ্তানি কমিয়ে দিতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ইএ