এদিকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নতুন করে ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫৬ জনই সহায়তা আনতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছে। এতকিছুর পরও পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ঢুকছে না গাজায়। শনিবার শুধুমাত্র ৩৬ ট্রাক ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছেছে উপত্যকাটিতে। যেখানে সীমান্তে অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ২২ হাজার ট্রাক।
গাজায় ট্রাকে করে প্রবেশ করছে ত্রাণ। আকাশ থেকেও পড়ছে বিদেশি সহায়তা। আর তা সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে গাজা বাসী। দীর্ঘদিন না খেয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের কাছে এখন সবচেয়ে প্রত্যাশার বস্তু এক মুঠো খাবার। আর তাইতো মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করেই জীবন বাজি রেখে ত্রাণ নিতে যাচ্ছেন সর্বস্তরের ফিলিস্তিনিরা।
ফিলিস্তিনি এক নাগরিক বলেন, ‘ভাই-বোনের মধ্যে আমি বড়। বিমান হামলায় আমার বাবা গতকাল শহীদ হয়েছেন। প্রত্যেকে কাছে এক প্লেট আটা চেয়েছি, কিন্তু পাচ্ছি না।’
অন্য একজন ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমি বিধবা। ছয়টি এতিম বাচ্চা রয়েছে আমার। বড় ছেলেটা যুদ্ধে আহত হয়েছে। জীবন ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন তাদের জন্য খাবার আনতে যাই।’
ত্রাণ নিতে যাওয়া এসব অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। চলছে বিমান হামলাও। আর এতে প্রতিদিনই ঘটছে বহু ফিলিস্তিনির হতাহতের ঘটনা। তাই জাতিসংঘের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার দাবি গাজাবাসীর।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘জাতিসংঘ যদি ত্রাণ বিতরণ করে তবে সহজেই তা আমরা পাই। তবে এখন কিছুই পাচ্ছি না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণ নিতে এসেছি। অনেক মানুষকে চোখের সামনে নিহত হতে দেখেছি।
গাজার ফিলিস্তিনিদের অসহায়ের এ চিত্র গত দুই বছর ধরেই দেখে আসছি বিশ্ব। তবে এবার দেখা মিললো হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলি জিম্মির করুণ অবস্থা। রোববার এক ইহুদি বন্দির ভিডিও প্রকাশ করে হামাস। যেখানে দেখা যায়, ক্ষুধার যন্ত্রণায় হামাসের গোপন সুড়ঙ্গের মধ্যেই নিজের কবর খুঁড়ছেন তিনি।
এরপরই এক ভিডিও বার্তায় তার কষ্টের কথা তুলে ধরেন ইসরাইলি ওই বন্দি।
আরও পড়ুন:
ইসরাইলি বন্দি রোম ব্রাস্লাভস্কি বলেন, ‘আল-কুদস ব্রিগেডের কাছে বন্দি রয়েছি আমি। গত দুই বছর ধরেই এখানে আছি। খুব অসুস্থ হয়ে গেছি। এমনকি হেঁটে বাথরুমেও যেতে পারি না। খাবার ও পানি কিছুই পাই না।’
ইহুদি জিম্মির এই অবস্থা দেখে শোকাহত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। সেই সঙ্গে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে যেকোনো মূল্যেই হোক হামাসের হাত থেকে বন্দিদের মুক্ত করা হবে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়হু বলেন, ‘ইসরাইলের সব নাগরিকদের মতো আমিও শোকাহত। হামাসের হাতে বন্দি বীভৎস ভিডিও দেখে খুব কষ্ট লাগছে। তার জন্য সবার কাছে প্রার্থনার অনুরোধ।’
অপরদিকে হামাস জানিয়েছে, ইসরাইল যদি গাজায় বিমান হামলা বন্ধ করে তবে ইহুদি বন্দিদের খাদ্য সহায়তা দেবে তারা। একইসঙ্গে উপত্যকাটিতে স্থায়ী মানবিক করিডোর খোলারও দাবি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির।