ককেশাসে করিডোর তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাধা, ইরানের সতর্কতা

ককেশাসে করিডোর তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বাধা
বিদেশে এখন
0

কূটনৈতিক মিত্র রাশিয়া পাশে থাকুক বা না থাকুক ককেশাস অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত করিডোর তৈরিতে বাধা দেবে ইরান। ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা আলী আকবর বেলায়াতি তাসনিম নিউজকে বলেন, এই করিডোরে বিদেশি হস্তক্ষেপ মেনে নিলে পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় ৪ দশকের সংঘাত শেষে মিত্রতার পথ বেছে নিয়ে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে দক্ষিণ ককেশিয়ার দুই দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া, আর এ মধ্যস্থতাটি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, দুই দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ‘ট্রাম্প রুট’ নির্মাণেও নেতৃত্ব দেবেন তিনি।

ওয়াশিংটন প্রস্তাবিত এই ‘ট্রাম্প রুট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড প্রসপারিটি’ বা ট্রিপ মূলত ককেশাস অঞ্চলে একটি করিডোর নির্মাণের পরিকল্পনা। যা আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে আজারবাইজান ও তুরস্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে। বিপরীতে, করিডোরটি উন্নত করার ক্ষমতা থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা করার সময় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এ করিডোরের ওপর ৯৯ বছরের উন্নয়ন ইজারা চুক্তিও আলাদাভাবে সেরে ফেলেছে ওয়াশিংটন।

আরও পড়ুন:

তবে, ইরান, তুরস্ক, রাশিয়া, জর্জিয়া, ইরান আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান এই ছয়টি দেশের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত এই ককেশাস অঞ্চলে করিডোর নির্মাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা আলী আকবর বেলায়াতি সাফ জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনকে কোনোভাবেই এই করিডোর তৈরি করতে দেবে না তেহরান। এবং এই বিরোধিতায় রাশিয়াকে পাশে না পেলেও থামবে না ইরান।

খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা আলী আকবর বেলায়াতি বলেন, ‘রাশিয়া থাকুক বা না থাকুক তেহরান কখনোই এই করিডোর তৈরি হতে দেবে না। ট্রাম্প এটাকে ভাড়া করা সম্পত্তি মনে করছেন। অর্থ দিলেই যেন ৯৯ বছরের জন্য এই রুট ভাড়া নেয়া যাবে। এই করিডোর মার্কিন প্রেসিডেন্টের মালিকানাধীন কোনো রুট নয়, বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাড়াটে সৈনিকদের কবরস্থানে পরিণত হবে।’

তাসনিম নিউজকে আলী আকবর আরও জানান, এই করিডোর নির্মাণের খবরে অসন্তুষ্ট আর্মেনিয়ার সাধারণ মানুষ। গেল ইরান সফরে ককেশাস অঞ্চলে করিডোর নির্মাণের বিরোধিতা করেছিলেন খোদ আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীও।

আল জাজিরার তথ্য বলছে, ভূ-রাজনৈতিকভাবে, ককেশাস অঞ্চলের দেশগুলির নানা ইস্যুতে জড়িত ইরান। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয়দেশের সঙ্গেই ইরানের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে। পাশাপাশি, ককেশাস অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব এবং তুরস্কের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিও তেহরানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কূটনৈতিক সম্পর্কের ধরন ইঙ্গিত করে আগামীতে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি ইরানের জন্য খুব একটা সুবিধাজনক হবে না। পাশাপাশি করিডোরের কারণে সীমানা পুনর্নির্মাণ করা হলে সেখানেও আঞ্চলিক শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা করছে তেহরান।

এসএইচ