পাকিস্তানের আকাশপথ প্রতিরক্ষায় এআরএফসি বাহিনী গঠন

পাকিস্তানের আকাশপথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
বিদেশে এখন
0

আকাশপথে শত্রুপক্ষের হামলা ঠেকাতে ও উপযুক্ত জবাব দিতে নতুন বাহিনী গঠন করেছে পাকিস্তান। আল জাজিরার দাবি, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের পর নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করতে আর্মি রকেট ফোর্স কমান্ড বা এআরএফসি নামের এ বাহিনীকে সামনে আনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগ মনে করে, নতুন এ বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে থাকলে শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের মতো কঠিন পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন হবে না।

৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের দিন আর্মি রকেট ফোর্স কমান্ড বা এআরএফসি নামে এক নতুন বাহিনীর ঘোষণা দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। প্রচলিত যুদ্ধকৌশল আরও শক্তিশালী করা ছাড়াও যে কোনো দিক থেকে শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার ক্ষমতা থাকবে নতুন এ বাহিনীর বলে জানান তিনি।

পেহেলগাম কাণ্ডের পর গেলো মে মাসে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় পাকিস্তান। এ সংঘর্ষকে সত্য ও ন্যায়ের যুদ্ধ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আবারও নয়াদিল্লির বিপক্ষে নিজদের বিজয়ী ঘোষণা করেন শেহবাজ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এ ভাষণ ও নতুন বাহিনী ঘোষণার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্ব।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আল জাজিরার আরও দাবি করছে, ভারতের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতে নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কৌশলগত দুর্বলতা বুঝতে পারে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগ অনুধাবন করে, শক্তিশালী বিমান বাহিনী থাকার পরেও আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে শত্রুকে ঘায়েল করতে পারে এমন একটি চৌকশ বাহিনী প্রয়োজন তাদের। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত কিংবা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরান-লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিদের যুদ্ধনীতিও অনুপ্রাণিত করেছে ইসলামাবাদকে বলছে আল জাজিরা।

আরও পড়ুন:

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, পাকিস্তানের নতুন বাহিনী মূলত শর্ট ও মিডিয়াম রেঞ্জের গাইডেড রকেট অপারেশন চালাবে। যার মধ্যে আছে ফাতাহ-১ ও ফাতাহ-২ এর মতো ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো পারমাণবিক নয়, কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে শত্রুর ভেতরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম। বর্তমানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সাব ডিভিশনের সংখ্যা নয়টি। এয়ার ডিফেন্স ও সাইবার কমান্ড ছাড়াও আছে স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড, যাদের কাজ পরমাণু হামলার কৌশল নিয়ন্ত্রণ করা।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগ মনে করে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সাময়িক প্রতিরোধের জন্য একটি সেনাবাহিনীর একটি দলকে ব্যবহার করার চেয়ে একটি বিশেষ বাহিনী প্রস্তুত থাকলে আকস্মিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। পাশাপাশি আর্মি রকেট ফোর্স কমান্ড বা এআরএফসি কে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে যেন তারা শত্রুপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে বিস্তৃত পরিসরে অভিযান চালাতে পারে। ইসলামাবাদের দাবি, এ সক্ষমতা একবার অর্জন করা গেলে, শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের মতো কঠিন পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন হবে না।

যদিও সীমাবদ্ধতার থাকার পরেও চার দিনের সংঘাতে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইসলামাবাদ। ভূপাতিত করা হয় কয়েকটি ভারতীয় যুদ্ধবিমানও। সংঘাত থামার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, আপাতত অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হলেও, সুযোগ পেলে আবারও যুদ্ধ শুরু করতে পারে ভারত।

এফএস