চীনকে বার্তা দিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে ভারত!

ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার প্রদর্শনীতে ব্যস্ত ভারত-পাকিস্তান-চীন
বিদেশে এখন
0

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা দেখাতে তীব্র প্রতিযোগিতায় নেমেছে ভারত-পাকিস্তান, বসে নেই চীনও। আগামী সপ্তাহে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিগুলোর সামনে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শনীর ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। যদিও আল জাজিরার দাবি, পাকিস্তান নয়, চীনকে বার্তা দিতে একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে নয়াদিল্লী। বিশেষ করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আগে ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া ইঙ্গিত করে, সীমান্ত সংকট সমাধানে বেইজিংকে নিবিড় বার্তা দিতে চায় মোদি প্রশাসন।

গেলো ২০ আগস্ট ওড়িশা রাজ্যে মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫ সফল পরীক্ষা চালায় ভারত। দ্রুততম এ ক্ষেপণাস্ত্রটি ঘণ্টায় ৩০ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

এর এক সপ্তাহ আগে স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যায় ‘আর্মি রকেট ফোর্স কমান্ড’ বা এআরএফসি নামে নতুন এক বাহিনীর ঘোষণা দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। 

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, চৌকশ বিমান বাহিনী থাকার পরেও আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে শত্রুকে ঘায়েল করতে বিশেষ এ বাহিনী প্রস্তুত করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার পেছনে আছে গেলো মে মাসে ভারতের সঙ্গে ৪ দিনের সংঘাতের অভিজ্ঞতা।

নতুন বাহিনী ঘোষণা ছাড়াও ৭৫০ কিলোমিটার রেঞ্জের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ফাতাহ ফোরের মহড়া চালিয়েছে ইসলামাবাদ। একই সময়ে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি সিক্স তৈরির অগ্রগতি নিয়ে বার্তা দেয় নয়াদিল্লী। 

যদিও আল জাজিরা বলছে, দিল্লির প্রতিযোগিতা মূলত ইসলামাবাদের সঙ্গে নয়, বরং চীনকে গভীর বার্তা দিতে সতর্কভাবে সমরাস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে ভারত।

ভারতীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল অগ্নি ফাইভ দিয়ে হামলা চালানো যাবে এশিয়া মহাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে। চীনের উত্তরাঞ্চলও আছে সে তালিকায়। ২০১২ থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ১২ বার অগ্নি ফাইভের মহড়া চালিয়েছে ভারত।

আরও পড়ুন:

গেলো মার্চের পর সবশেষ মহড়া হলো ২০ আগস্ট। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোদির চীন সফরের আগে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার তোড়জোড়।

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন বা এসসিও সামিটে অংশ নিতে ৭ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। ৩১ আগস্ট চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসবেন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে। 

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেও পাল্টাতে পারে নয়াদিল্লী-বেইজিং সম্পর্কের রসায়ন। তবে এখানে সক্ষমতার সব ট্রাম্প কার্ড হাতে নিয়েই আলোচনায় বসতে হবে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে। 

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মস্কো থেকে তেল ও সমরাস্ত্র কেনার দায়ে মার্কিন শুল্কের বোঝা বইতে হলেও আঞ্চলিক রাজনীতিতে নয়াদিল্লীর প্রধান প্রতিপক্ষ চীন।

এদিকে শুধু ভারত নয়, পুরো বিশ্বের সামনে নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের প্রস্তুতি চলছে চীনে। জাপানের বিরুদ্ধে চীনের যুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী সপ্তাহে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ হবে দেশটিতে। যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ প্রায় ২৬ জন বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রথম প্রকাশ্য মঞ্চে আসতে যাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।

বেইজিং জানিয়েছে, এ কুচকাওয়াজে তার সর্বাধুনিক অস্ত্র প্রদর্শন করবে চীন। এর মধ্যে থাকবে যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ও ড্রোনবিধ্বংসী ব্যবস্থা। প্রথমবারের মতো দেখানো হবে চীনা সেনাবাহিনীর নতুন গঠন কাঠামো। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, পশ্চিমা বিশ্ব ও সামরিক বিশ্লেষকদের চোখ থাকবে এ অনুষ্ঠানের দিকে।

এসএইচ