হিজামার মাধ্যমে শরীর থেকে দূষিত রক্ত বের করে নেওয়া হয়। এতে শরীরের মাংসপেশিগুলোতে রক্তপ্রবাহ হয় দ্রুত। বৃদ্ধি পায় পেশি, চামড়া, ত্বক ও শরীরের ভেতরের কার্যকারিতা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। ২৬ বছর বয়সী রোগীর শরীরে বসানো হচ্ছে কাপ। কিছুক্ষণ পরই শুরু হবে থেরাপি।
প্রাচীন এ পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীর ঘাড় ও পিঠের ব্যথা কমাতে স্থাপন করা হয় আটটি সাকশন কাপ। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে শরীর থেকে বের করা হয় দূষিত রক্ত। তুরস্কে হাকামাত নামে পরিচিত এই পদ্ধতিতে বর্তমানে হয়েছে বেশ জনপ্রিয়। ঝুঁকি কমাতে এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহারে সরকার থেকেই নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে নির্দিষ্ট ক্লিনিক। যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে নিতে হবে চিকিৎসা।
চিকিৎসকরা জানান, আধুনিক চিকিৎসার বিকল্প নয় এই পদ্ধতি, বিশেষ করে ফাইব্রো মায়ালজিয়া, মাইগ্রেন এবং জয়েন্টে ব্যথার জন্য ব্যবহার হতে পারে এই থেরাপি। বর্তমানে ১৫টি পদ্ধতিতে দেয়া হচ্ছে এ চিকিৎসা। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকেও থেরাপিতে নিতে আসছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন:
চিকিৎসকরা বলেন, ‘শত শত বছর ধরে প্রাচীন পদ্ধতির এ চিকিৎসা চলে আসছে। আমাদের দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মেনে আমরা ১৫টি ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছি থেরাপিতে। প্রশিক্ষিত চিকিৎসকরাই দিচ্ছেন এই সেবা। আমরা আধুনিক চিকিৎসাকে উপেক্ষা করি না। রোগীদের পছন্দ এবং প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে থেরাপি প্রদান করি। আমাদের কাছে বিদেশ থেকে প্রচুর রোগী আসছে, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন ব্যথায় ভুগছেন।’
রোগীরা জানান, থেরাপির পর মেনে চলতে হয় নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্যবিধি। তারা বলেন, ‘অপারেশনের আগে ও পরে আমার তিন দিনের জন্য একটি ডায়েট মেনে চলি। দুধ, মাছ, ডিম, দইয়ের মতো কোনও প্রাণীজ উৎসের খাবার খেতে পারবো না। এটি ছিল বেশ ক্লান্তিকর। বিভিন্ন সংক্রমণ এড়াতে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ভালো। ডাক্তাররা প্রতিটি রোগীর জন্য আলাদা আলাদা জোঁক ব্যবহার করেন। আপনি এখানে নিরাপদ বোধ করবেন।’
শুধু হিজামা থেরাপি নয়, তুরস্কের বিভিন্ন হাসপাতালে জোঁকের মাধ্যমেও দেয়া হয় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা। যা সংগ্রহ করা হয় নির্দিষ্ট খামার থেকে। এছাড়া দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে তুরস্কের ৬৬টি প্রদেশের নির্দিষ্ট হাসপাতালে সার্টিফাইড চিকিৎসকদের মাধ্যমে নিতে হবে এ থেরাপি।