যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ত্রাণ সহায়তা বাড়ালো বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও যুক্তরাজ্য

ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনের মানুষ
বিদেশে এখন
0

১ লাখ ৭০ হাজার টনের বেশি খাদ্যপণ্য গাজাবাসীর জন্য প্রস্তুত রেখেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। যুদ্ধবিরতির পর গাজায় বেড়েছে ত্রাণ সরবরাহ। ইসরাইলি হামলা বন্ধ হলেও, ফিলিস্তিনিদের এখন ভুগতে হচ্ছে খাদ্য সংকটে। গাজা সিটির বাজারগুলো আগের অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। গাজার জন্য ২ কোটি ৭০ লাখ ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য।

দীর্ঘ দুই বছরের ভয়াবহ যুদ্ধের পর অবশেষে গাজায় প্রবেশ করছে মানবিক সহায়তার ট্রাক। গোটা উপত্যকায় ভেঙে পড়েছে খাদ্য ব্যবস্থা। অনাহারে অর্ধাহারে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার। নেই মৌলিক চাহিদা পূরণের ন্যূনতম সুযোগ। গেল আগস্ট মাসেই গাজার দুর্ভিক্ষের খবর প্রকাশ্যে আনে জাতিসংঘ।

১৯ লাখ জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশই হারিয়েছে তাদের ঘরবাড়ি। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি তথ্য মতে, ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জমা হয়েছে ৬ কোটি টনের বেশি ধ্বংসাবশেষ। যা ২৫টি আইফেল টাওয়ারের সমান। বিশ্বব্যাংক বলছে, গাজা পুনর্নির্মাণে প্রয়োজন ৫০০ কোটি ডলার।

এমন অবস্থায় যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা স্বস্তি এনেছে গাজাবাসীর মনে। এখন তারা অপেক্ষায় আছে খাবারের। এরইমধ্যে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তাদের প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। গাজা উপত্যকার ১৪৫টি পয়েন্ট থেকে এসব খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হবে। এরই অংশ হিসেবে প্রথম তিন মাসের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লাখ পরিবারের জন্য দেয়া হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টনের বেশি খাদ্য সহায়তা। রোববার গাজায় প্রবেশ করেছে ৪ শতাধিক ট্রাক। যেখানে আছে খাদ্য, ওষুধসহ অন্যান্য মানবিক সহায়তা।

আরও পড়ুন:

গাজাবাসীর জন্য প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক মানবিক সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ডব্লিউএফপি। গাজার স্থানীয় বেকারি ১০ থেকে ৩০টি চালু করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এছাড়া, যারা ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গিয়ে সহায়তা নিতে পারবে না, তাদের জন্য ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

এদিকে, মানবিক সহায়তার ট্রাক প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই হামলে পড়ে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা। তারা ট্রাক থেকেই সংগ্রহ করছে খাবার। এখনো তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে ৫০ হাজার শিশু। ধাপে ধাপে গাজায় প্রবেশ করবে ৬ হাজারের বেশি সহায়তা ট্রাক।

গাজায় পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যসেবার উপকরণের জন্য ২ কোটি ৭০ লাখ ডলারের সহায়তা প্যাকেজ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এই তহবিল ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং নরওয়েজিয়ান শরণার্থী কাউন্সিলের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।

ইসরাইলি হামলা বন্ধের পর গাজা শহরের বাজারগুলোতে ফিরেছে প্রাণ। বেড়েছে মানুষের ভিড়, কেনাকাটায় ব্যস্ত বাসিন্দারা। রাস্তায় দেখা যাচ্ছে মানুষের সমাগম। যুদ্ধবিরতি খবরে আনন্দিত ফিলিস্তিনিরা।

ফিলিস্তিনিদের এখন অন্যতম চাওয়া হচ্ছে গাজায় খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখা। ত্রাণের ট্রাকগুলো নিরবচ্ছিন্ন ও সুরক্ষিতভাবে গাজায় প্রবেশের দাবি জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা। তাদের আশঙ্কা পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা না পেলে যুদ্ধ বন্ধ তাদের কোনো উপকারে আসবে না।

ইএ