ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' পেহেলগামে হামলার সাথে জড়িত ছিল- পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত টেলিগ্রাম নথি ফাঁসের দাবি করার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই নতুন থিওরি এসেছে ভারতীয় গণমাধ্যমে।
ভারতে সন্ত্রাসবাদ দমনকারী এজেন্সি এনআইএ’র তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে এনডিটিভি বলছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টালিজেন্স বা আইএসআই এর মদদে পেহেলগামে হামলা চালায় নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়্যবা।
শুরুতে বলা হচ্ছিল, কাশ্মীরে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে তা পর্যবেক্ষণ করবে জাতিসংঘ। কিন্তু সময় যতই গড়াচ্ছে প্রকৃত তদন্তের পরিবর্তে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রমাণ দাঁড় করাতেই যেন বেশি ব্যস্ত নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ।
২২ এপ্রিল হামলার পর লস্কর-ই-তৈয়্যবার ছায়া সংগঠন রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের দায় স্বীকার ও অস্বীকার নিয়ে এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগের সূত্রপাত। এরপর মোটাদাগে কাশ্মীরে তৎপর এমন ৩টি সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলার দায় চাপানোর চেষ্টা করে ভারত। এমনকি সরাসরি পাকিস্তানকেও দায়ী করে ভাষণ দিয়েছেন বিজেপি'র শীর্ষ নেতারা। কিন্তু বারবারই পাকিস্তান দাবি করে আসছিল, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে দুষছে নয়াদিল্লি।
এই দোষারোপের রাজনীতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন নয় বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। বরং তারা বলছেন, এই দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখাই দুই দেশের জন্য অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কাঁদা ছোড়াছুড়ি চলতে থাকলেও বড় সংঘাতে জড়ানোর আভাস পাওয়া যাচ্ছে না বলেও ধারণা করছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘তারা নৃশংস যে কোনো হামলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জানে। গেল ৬ দশক ধরে তারা এটাই করে আসছে। একজন কাশ্মীরির জন্য এটা খুবই দুঃখজনক হলেও, মারাত্মক কোনো সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।’
আঞ্চলিক ভারসাম্যের প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গালফ উপসাগরীয় রাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের যেমন সখ্যতা আছে তেমনি ভারতের পাশে থাকতে পারে জি টোয়েন্টি জোট। তারা মনে করেন, যুদ্ধে জড়ানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে দুই দেশকেই পরামর্শ দেবে তার মিত্রশক্তিগুলো।
তবে রাজনীতির এই দোলাচলে, প্রকৃত অপরাধীরা আদৌ চিহ্নিত হবে কী না- তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। পাকিস্তান শুরু থেকেই পেহেলগামের হামলার তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও এর তোয়াক্কা করছে না ভারত। কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানেরও নেই দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। তাই, যে কোনো মূল্যে পর্যটকদের হত্যাকারী ও হামলায় মদদদাতাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে- নয়াদিল্লির এই হুংকার আলোর মুখ দেখবে কী না- তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের।