ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭, আহত ৩০

রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণ
এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারতের তেলেঙ্গানায় রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৭ জনে, আহত ৩০ জন। নিখোঁজদের সন্ধানে ছুটোছুটি করছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় ৯০ দিনের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেবে মোদি প্রশাসন।

বিস্ফোরণের খবরে কারখানায় ছুটে এসেছেন কর্মীদের স্বজনরা। একটু খবরের আশায় ছুটে বেড়াচ্ছেন হাসপাতাল থেকে কারখানায়, কারখানা থেকে হাসপাতালে।

ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে সিগাচি ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের হায়দ্রাবাদ কারখানায় রিঅ্যাক্টর বিস্ফোরিত হয়ে ধসে পড়ে মূল উৎপাদন ইউনিট। সোমবারের এ ঘটনায় হতাহতদের বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েন। সেখান থেকে প্রায় ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়। দগ্ধ ও আহত অন্তত ২৫ জনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় চিকিৎসার জন্য। হতাহতরা ওড়িষা, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দা।

কারখানায় স্বজনদের খোঁজে ছুটে আসাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমার ছেলে, জামাতা, বড় আর ছোট ভাসুর, সবাই এই একই কারখানায় কাজ করে। দিনের বেলা কাজ করে। আমার জামাতা মেশিন চালায়। ওরা কে কোথায় আছে, কোনো খবর পাইনি। তিনটা হাসপাতালে গিয়েছি, রাত পার করে সকালে এখানে এসেছি। এখনও জানি না তারা কে কোথায় আছে।’

পলিমার ব্লেন্ড, লুব্রিকেন্ট আর ওষুধ-খাবার-প্রসাধনী ও রাসায়নিক শিল্পে ব্যবহৃত নানা উপকরণ উৎপাদন করে সিগাচি। খাদ্য ও ওষুধশিল্পে ব্যবহৃত মাইক্রো-ক্রিস্টা-লাইন সেলুলোজ উৎপাদনে ভারতজুড়ে সিগাচির তিন কারখানার একটি, হায়দ্রাবাদের এই কারখানা। বছরে প্রায় দুই হাজার ১৭০ কোটি টন এই রাসায়নিক উৎপাদন করে প্রতিষ্ঠানটি। যার এক-চতুর্থাংশের বেশি উৎপাদন হতো দুর্ঘটনাকবলিত কারখানাটিতে। এ ঘটনায় ৯০ দিনের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। জানা যায়নি বিস্ফোরণের কারণ।

কারখানায় কাজ করে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি মেশিন চালাচ্ছিলাম। কোনো দরজা-জানালা ছিল না ওখানে। একটা শব্দ পেয়ে এগিয়ে যাই, জানালা আর আশপাশে কিছু কাগজ দেখতে পাই। সাথে সাথে শরীরে কাগজ জড়িয়ে জানালা থেকে লাফ দিই। তারপরই জায়গাটা ধোঁয়ায় ভরে যায় আর বিশাল বিস্ফোরণ দেখি।’

এ ঘটনায় পুঁজিবাজারে ২০২৪ সালের মার্চের পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছে সিগাচি। একদিন না যেতেই দর হারিয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। অন্যদিকে নিহতদের পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসায় ৫০ হাজার রুপি প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা আর অপর্যাপ্ত সরকারি তদারকির কারণে ভারতের শিল্পখাতে দুর্ঘটনা নতুন নয়। ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি সারা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম শিল্প বিপর্যয় হিসেবে পরিচিত। ১৯৮৪ সালের ওই ঘটনায় ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড কীটনাশক কারখানার আশেপাশের ৫ লাখেরও বেশি মানুষ অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস মিথাইল আইসোসায়ানেটের সংস্পর্শে এসেছিলেন।

এসএস