একযোগে বিমান ও স্থল হামলায় কেঁপে উঠছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর আভদিভকা। একই সঙ্গে বাখমুত এবং কুপিয়ানস্কের আশপাশের এলাকায়ও চালানো হচ্ছে হামলা। বাড়ানো হয়েছে কামিকাজে ড্রোনের ব্যবহার।
যুদ্ধের ময়দানে রুশ বাহিনীর হামলা মোকাবিলায় ইউক্রেনের সেনাদের অগ্রগতির প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত ২৪ ঘণ্টায় মস্কোর ৮টি হামলা সফলভাবে প্রতিহত করার দাবি করে ইউক্রেন।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, 'আভদিভকায় চলমান যুদ্ধে রাশিয়া ইতোমধ্যেই তাদের সৈন্য এবং সরঞ্জাম হারাচ্ছে। আমাদের প্রতিটি সৈনিক রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তাদের যুদ্ধ মিশন প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।'
এদিকে রুশ বাহিনীর হামলা এখনও নৃশংস এবং নির্মম পর্যায়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করছে ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলো। শীতকালে মস্কো আক্রমণের ভয়াবহতা আরও বাড়াবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। কারণ গত শীতেও একই পথে হেঁটেছিল পুতিন বাহিনী। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে চালানো হয়েছিলো ধ্বংসাত্মক হামলা। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ইউক্রেনের উচিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা; এমনটাই বলেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস জানান, 'ইউক্রেনে এখনও নৃশংস এবং নির্মম যুদ্ধ পরিচালিত করছে রাশিয়া। এমনকি শীতকালে ইউক্রেনের অবকাঠামোর উপর আক্রমণ বাড়বে বলেও আভাস মিলছে। তাই বিমান প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করা ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।'
এরইমধ্যে নিজেদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরালো করতে উঠে পড়ে লেগেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। আকাশে আধিপত্য অর্জনে নতুন নতুন সেনাদের দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। এমনকি মিত্র দেশগুলোকে অতিরিক্ত অস্ত্র সরবরাহে আহ্বান জানিয়েছে কিয়েভ।
কিয়েভের সেনারা জানান, 'আমরা জুন মাস থেকে অস্ত্রগুলো ব্যবহার করে আসছি। ভবিষ্যতে রাশিয়ার আরও লক্ষ্যবস্তু মোকাবিলায় আমাদের দক্ষতা বাড়াতে কাজ চলমান। সেভিয়েত যুগের সরঞ্জাম দিয়ে যোদ্ধাদের দক্ষ করে তোলার কাজ চলছে। তারা আমাদের বিমান প্রতিরক্ষায় কাজ করছে।'
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ইউক্রেনকে দুঃসংবাদ দিলো জার্মান। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে কিয়েভকে ১০ লাখ গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস জানান, '১০ লাখ বলা সহজ, ব্যয় করার মতো অর্থও আছে। কিন্তু উৎপাদন তো করতে হবে। এ অবস্থায় অনুমান করা নিরাপদ যে ১০ লাখ রাউন্ড গোলা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।'
এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম কিস্তিতে ইউক্রেনকে ৩ লাখ কামানের গোলা সরবরাহ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইউরোপীয় ইউনীয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।
এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইউক্রেনের কাছে এখন পর্যন্ত ৩৬৪ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে পাকিস্তান। কিয়েভের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে ২০২২ সালের আগস্টে মার্কিন দুটি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ইসলামাবাদ।