ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাগবিতণ্ডার পর ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্কে চির ধরলেও যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইউক্রেন রাজি হওয়ায় আবারও সম্পর্কের মোড় ঘুরলো।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সৌদি আরবে জরুরি বৈঠকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করে ইউক্রেন। শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনা বসতেও রাজি হয় তারা। ইউক্রেনের এমন পদক্ষেপে মন গলেছে ট্রাম্পেরও। বিনিময়ে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা পুনরায় চালুর ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
ট্রাম্প-জেলেনস্কির শিথিল সম্পর্ক অনেকটা চাপে ফেলে দিয়েছে রাশিয়াকে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, শান্তির পথ বেছে নেয়া এখন নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর। ট্রাম্পের বিশ্বাস, তার প্রস্তাব সহজেই ফেলতে পারবেন না বন্ধু পুতিন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আশা করি প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হবেন। আমরা একটা সুন্দর পথ দেখাতে পারি। ভয়াবহ এই যুদ্ধে প্রতি সপ্তাহেই হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষও রক্ষা পাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধের অবসান চায়।’
এদিকে ক্রেমলিনের ভাষ্য, যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার জন্য কিয়েভ কতটা প্রস্তুত তা পর্যবেক্ষণ করবে মস্কো। তাদের দাবি, সংঘাত নিরসনে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে আসছে রাশিয়া। যদিও, মস্কো যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন থেকে বিচ্যুত হবে না বলেও জানানো হয়।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘ইউক্রেনের সঙ্গে বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র তাদের চিন্তাভাবনা নিজেদের মতো করে বুঝার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গেও কোন আলোচনা হয়নি। ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য কতটা প্রস্তুত তাও আমাদেরকে দেখতে হবে। এখানে সবই খোলাসা করা হয়েছে। মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে কোনো দর কষাকষি হয়নি।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, মস্কোর জন্য বিষয়টি অনেকটা বিব্রতকর আপসও হতে পারে। বন্ধু প্রতিম ট্রাম্পকে খালি হাতে ফেরাতে ভাবতে হবে পুতিনকে। কারণ, শুরু থেকেই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করে আসছে রাশিয়া। অন্যদিকে ট্রাম্পও পুতিনের ওপর আস্থা হারাতে চাইবেন না।
এদিকে যুদ্ধপন্থি রাশিয়ার কট্টরপন্থীরা, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছেন। তাদের আশঙ্কা এ সময়ে ইউক্রেন আরও সুসংগঠিত হওয়া সুযোগ পাবে। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পেছনে যুদ্ধের ময়দান থেকে ন্যাটোকে সরিয়ে দেয়ার শর্ত দিতে পারে রাশিয়া।