ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে হুট করেই দেখা দেয় বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে দেড় লাখের বেশি বাড়ি। বিরূপ প্রভাব পড়ে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবেও। কান শহরের পশ্চিমাঞ্চলের একটি সাবস্টেশনে আগুন লাগার পর শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। বিশেষ করে রেস্তোরাঁগুলোতে বন্ধ হয়ে যায় রান্নাবান্না, অকেজো হয়ে পড়ে কফি মেশিন। বিপাকে পড়ে আইসক্রিম পার্লারগুলো। এছাড়া, এটিএম বুথ অকার্যকর হয়ে পড়ায় লেনদেন নিয়ে বিপাকে পড়েন আগত অতিথিরা।
অতিথিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পুরো কান শহরে হাহাকার চলছে। কোথাও কফি নেই, খাবার নেই। রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ হয়ে যায়।’
অন্য একজন বলেন, ‘আমরা কোনো কাজই করতে পারিনি। কার্ডে পেমেন্ট বন্ধ। সবার কাছে নগদ অর্থ নেয়া হচ্ছে।’
কানে অংশ নেয়াদের মধ্যে একজনে বলেন, ‘সকাল থেকেই বাসায় বিদ্যুৎ ছিল না। রেডিও বন্ধ, ওভেন চলছিল না। বাসিন্দাদের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়।’
অন্য একজন বলেন, ‘প্রদর্শনী চলার মাঝপথে হুট করেই স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১০ মিনিট পরে আবারও কিছুটা সচল হয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।’
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়ে কান শহরের ট্রেন চলাচল। বন্ধ হয়ে যায় ট্রাফিক লাইট। শহরজুড়ে গণপরিবহনে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। চার্জের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় অনেকের ফোন। ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে কানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। সমাপনী অনুষ্ঠানের আগেই বিদ্যুৎ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় শহর কর্তৃপক্ষ। প্রাণ ফিরতে শুরু করে রেস্তোরাঁ ও চলচ্চিত্র উৎসবের অনুষ্ঠানস্থলে।
কান চলচ্চিত্র উৎসব ঘিরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনাকে নাশকতা বলছে ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ। মধ্যরাতে আগুন লাগার পর দমকলকর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঝুঁকি এড়াতে বন্ধ করে দেয়া হয় বিভিন্ন জায়গার বিদ্যুৎ সংযোগ। অপরাধীদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন শহর কর্তৃপক্ষ।
নীল জলরাশির সাগর পাড়ের শহর কান। ১৩ মে থেকে শুরু হয় চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ উৎসব কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। টানা ১৪ দিনের আয়োজনে লাল গালিচা, ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার এবং রাজনৈতিক বার্তায় ছিল পরিপূর্ণ।