গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩

মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। বুধবার ইসরাইলি হামলায় উপত্যকাটিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩ জন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ৪ ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। এদিকে, গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিদের ভূমিছাড়া করার পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে স্পেন।

গাজায় চলছে ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতি। চুক্তি অনুযায়ী হামলা নিষিদ্ধ থাকলেও যেন তোয়াক্কাই করছে না ইসরাইলি বাহিনী। বুধবার উপত্যকায় আইডিএফের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৩ জন। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির মধ্যে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে শতাধিক।

যদিও এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ নেই হামাসের বিরুদ্ধে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার হস্তান্তর হচ্ছে ৪ ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ। শোকের এই দিনটির যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আজকের দিনটি ইসরাইলবাসীর জন্য খুবই কঠিন। আমাদের জিম্মিদের মরদেহ ইসরাইলি ভূখণ্ডে ফিরছে। আমরা দানবদের সঙ্গে লড়াই করছি। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমার সরকার দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।’

গাজাবাসীকে ভূমিছাড়া করার মাধ্যমে উপত্যকা খালি করতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে স্পেন। মঙ্গলবার মিশর সফরে গিয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ জানান, ফিলিস্তিনিদের রেখেই গাজা পুনর্গঠন করতে হবে। দ্বিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে মিশরের প্রেসিডেন্ট জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা পেলে ঘৃণিত পদক্ষেপ রোধ করা সম্ভব।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থন পাচ্ছি। তবে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করতে দেয়া হবেনা। বিষয়টির নিশ্চয়তা পেলেই উপত্যকা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা সম্ভব।’

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, ‘গাজা ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড। তাই তাদের বাস্তুচ্যুত করার অধিকার নেই কারো। এমনকি এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। উপত্যকাটির পুনর্গঠন করতে হলে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করা যাবে না।’

এদিকে আঞ্চলিক সংঘাত নিরসনে ইরানের সঙ্গে কাজ করতে সম্মতি জানিয়েছে কাতার। তেহরান সফরে গিয়ে এ কথা জানান কাতারের আমির। গাজাবাসীর প্রতি চালানো অত্যাচারের বিচার নিশ্চিতে কাতারের আমিরের সহায়তা চান ইরানের প্রেসিডেন্ট।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে সমস্যা নিরসনে আমরা একমত হয়েছি। দীর্ঘ ১৫ মাস গাজাবাসীর ওপর যে জুলুম, নির্যাতন ও অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

দ্বিতীয় মাসে প্রবেশ করেছে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি আগ্রাসন। গেল ৩০ দিনে অঞ্চলটিতে হত্যা করা হয়েছে অন্তত ২৬ ফিলিস্তিনিকে। অপারেশন আয়রন ওয়ালের আওতায় এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬ শতাধিক ফিলিস্তিনি। গৃহহীনের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ হাজার। যা ১৯৬৭ সালের তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর সর্বোচ্চ।

এএম