ইসরাইলি আগ্রাসনের শিকার নিরীহ গাজাবাসীর জন্য মানুষের হৃদয়ে প্রতিনিয়ত যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তারই প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছেন ফ্রান্সের একদল মানবাধিকার কর্মী।
প্যারিসের ফাউন্টেন অব ইনোসেন্টস নামক কৃত্রিম ঝর্ণার পানি রক্ত রাঙা করে জোর দাবি তুলেছেন গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর রক্তস্নান বন্ধের। হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানেও একই বার্তা। গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ না থামানোয় ক্ষোভ জানান তারা।
মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘গাজায় ইসরাইল যে অবর্ণনীয় ও অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তার জন্য আমার ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আমরা এই ক্ষোভের প্রতীক হিসেবে এখানকার পানিকে রক্তের রঙে রাঙিয়েছি।’
ইসরাইল বিরোধী ব্যতিক্রমী এই বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং ইউরোপীয় রাজনৈতিক নেতাসহ সব সম্প্রদায়কে সোচ্চার করা ছাড়াও, কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে আহ্বান জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁরও ইসরাইলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত। এর মধ্য দিয়ে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বাধ্য করতে হবে। অবিলম্বে টেকসই যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা জারি করা দরকার।’
এদিকে অবিলম্বে গাজা আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে খোদ ইসরাইলেরই সাবেক ও বর্তমান এক হাজার ২০০ রিজার্ভ সেনা। সরকার ও সেনাপ্রধানের কাছে চিঠি দিয়ে তারা এ আহ্বান জানায় বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, সংঘাত দীর্ঘায়িত করলে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হতে পারে। আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বেশিরভাগ ইসরাইলির ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
মৃত্যুপুরী রূপ দেয়া গাজায় এখনও মারণাস্ত্রের আঘাতে হত্যাযজ্ঞ চালানো ছাড়াও, ক্ষুধার যন্ত্রণা দিয়ে অবুঝ শিশুসহ গাজার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে ইসরাইল মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিচ্ছে। ত্রাণ নিতে গিয়েও ইসরাইলি আগ্রাসনের নিশানা হচ্ছেন গাজাবাসী। এ অবস্থায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ বলছে, দিন দিন আরও করুণ হচ্ছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের পরিস্থিতি।