গাজায় প্রায় দুই বছরের আগ্রাসনে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেও হাসিমুখে হোয়াইট হাউজে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তোষামোদ করেই যেন সব খুন মাফ।
বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘যখন আমরা কথা বলছি, তখন তিনি একের পর এক দেশ ও অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছেন। তাই আমি প্রেসিডেন্টকে এই চিঠিটা উপহার দিচ্ছি, যেটা আমি নোবেল পুরষ্কার কমিটিকে পাঠিয়েছি। শান্তি পুরষ্কারের জন্য আমি আপনাকে মনোনীত করছি, আপনারই এটা প্রাপ্য।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছি আমরা। অনেক ভালো সময় একসাথে কাটিয়েছি। অনেক কাজ করতে হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি এর ভালো ফলও মিলেছে। সামনে আরও ভালো কিছু আমরা পেতে যাচ্ছি।’
দুই নেতা শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরল অর্জনের দাবি করলেও, গাজার দিকে তাকালে তার কোনো ছাপ মেলে না। ক্রমশ মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, স্বজনহারা-অভুক্ত মানুষের আহাজারি চলছে। কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরাইল-হামাস শান্তি আলোচনা চললেও নেই গাজায় হামলা বন্ধের আভাস। একদিনে আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা আর দ্বিপাক্ষিক শান্তির সম্ভাবনা আরও ম্লান করে দিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেয়ার ওপর জোর দেন নেতানিয়াহু। এমন পরিস্থিতিতেই হোয়াইট হাউজের বাইরে অবস্থান নেন গাজায় যুদ্ধ বন্ধের সমর্থকরা।
অবস্থানকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি কারণ এখনও গাজায় ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।’
অন্য একজন বলেন, ‘মানুষ ভুগছে আর যেভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে, সেটা সহ্য করতে পারছি না।’
অন্য আরেকজন বলেন, ‘আমাদের নীরব থাকা উচিত নয়। আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। কারণ আজ ওরা, এরপর আমাদেরও এমন দিন আসবে।’
অন্যদিকে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। বন্দর ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হয় সোমবারের (৭ জুলাই) হামলা। এর আগে লোহিত সাগরে ম্যাজিক সিস নামের একটি বিশাল পণ্যবাহী জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনের হুতি সেনাবাহিনী মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া বলেন, ‘অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের বন্দরে প্রবেশের ঔদ্ধত্যতা দেখিয়েছে, এমন একটি প্রতিষ্ঠানের জাহাজে ইয়েমেন নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। দু'টি মানববিহীন নৌকা থেকে পাঁচটি ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল আর তিনটি ড্রোন ছোঁড়া হয়। সরাসরি জাহাজে আঘাত হানায় পানি ঢুকে সেটি এখন ডোবার পথে।’
যদিও জাহাজটি থেকে ২২ নাবিকের সবাইকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান।