ট্রাম্পের স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত অপেক্ষায় ‘বিগ বিউটিফুল বিল’

‘বিগ বিউটিফুল বিল’
উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

সিনেটে পাস হওয়ার পর ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ এখন ট্রাম্পের স্বাক্ষরের মাধ্যমে চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায়। বিলটি চূড়ান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ আরও তিন দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে। ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা চাক শুমারের মতে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর ছাড় ও ব্যয় বিলটি রিপাবলিকানদের তাড়া করে বেড়াবে বছরের পর বছর। তীব্র সমালোচনার মুখে সিনেটে দীর্ঘ প্রায় ৪৮ ঘণ্টার বিতর্কের পর এক ভোটের ব্যবধানে গতকাল (মঙ্গলবার, ১ জুলাই) পাস হয় ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’।

তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে অবশেষে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাস হলো ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিল। সিনেটে প্রায় ৪৮ ঘণ্টার ম্যারাথন বিতর্কের পর মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে তা পাস হয়। বিলটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে প্রতিনিধি পরিষদে। যদিও পরিষদের কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য এরইমধ্যে বিলের কিছু শর্তের বিরোধিতা করেছেন।

আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের আগেই বিলটিতে স্বাক্ষর করে সেটিকে আইনে পরিণত করতে চান ট্রাম্প। এই সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করার পক্ষে আশাবাদী প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন। বিলটিতে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যাপক কাটছাঁট করা হয়েছে। পাশাপাশি কর হ্রাস করা হবে সাড়ে চার ট্রিলিয়ন ডলার।

প্রস্তাবিত বিলে কর কমানো, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কমানোর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সক্ষমতা এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে খরচ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বিলটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের কর ছাড়ের সম্প্রসারিত রূপ।

বিলে নিম্ন আয়ের মার্কিন নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও খাদ্যসহায়তা কর্মসূচি থেকে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি ডলার কাটছাঁট করা হবে। এছাড়া, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলের পরিবেশবান্ধব জ্বালানির সুবিধা বাতিল করা হবে। এতে আগামী এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণে আরও যুক্ত হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। আর বর্তমানে দেশটিতে ঋণের পরিমাণ ৩৬ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বিলে সীমান্ত ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি ডলার। যেখানে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত প্রাচীরের জন্য সাড়ে চার হাজার ৬০০ কোটি এবং অভিবাসীদের আটকের জন্য ব্যয় করা হবে সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার।

বিলটি নিয়ে ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকানদের মধ্যেও মতভেদ দেখা দিয়েছে। সিনেটের সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাটিক নেতা চাক শুমার বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার মতে, লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কেড়ে নিয়ে তারা নিজেদের খরচ বাড়াচ্ছে।

প্রস্তাবিত বাজেট বিল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে এরইমধ্যে দ্বন্দ্বে এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্ক। ব্যবসা ও সামাজিক খাতে ভর্তুকির পরিমাণ কমানোয় চটেছেন মার্কিন ধনকুবের। এমনকি নতুন দল গঠনেরও হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন তিনি। যদিও ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে ইলন মাস্কের সমালোচনা করেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট।

মঙ্গলবার সিনেটে বিলের পক্ষে-বিপক্ষে সমান ভোট পড়ায় টাইব্রেকারে পক্ষে ভোট দেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। বিলটির বিপক্ষে ৪৭ জন ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে ৩ জন রিপাবলিকানও ছিলেন।

এসএস