বন্দুকধারীর গুলিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ চারজন নিহতের ঘটনায় চার দিন পেরিয়ে গেছে। এখনও শোকে স্তব্ধ নিউ ইয়র্কবাসী। পাশাপাশি তাড়া করছে আতঙ্কও।
৩৬ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন পুলিশ সদস্য দিদারুলের বাড়ি মৌলভীবাজারে। এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটি। বন্দুকধারীর গুলিতে তার মৃত্যু অভিবাসী বাংলাদেশিদের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে বলে জানালেন বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং নিউ ইয়র্ক পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শামসুল হক।
তিনি বলেন, ‘দিদারুল ইসলাম এবং আমি বাংলাদেশের একই জেলা থেকে এসেছি। আমরা একই উপভাষায় কথা বলতাম। আমাদের একইরকম রীতিনীতি ছিল। আমরা একে অপরকে খুব ভালো বুঝতে পারতাম। তার মৃত্যু আমাদের সম্প্রদায় এবং আমাদের হৃদয়ে একটি ক্ষত তৈরি করেছে।’
দিদারুল ইসলামের আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, সন্তান ও বাবা-মায়ের প্রতি সমবেদনা ও শোক জানতে ছুটে গেছেন নিউ ইয়র্ক সিটির ডেমোক্র্যাটিক মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি।
তিনি বলেন, ‘ইসলামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমি তার পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছি। ছোট-বৃদ্ধ, তার মৃত্যুতে সবাই শোকাহত। সবার হৃদয় এমনভাবে ভেঙে গেছে যা ভাষায় বর্ণনা করা অসম্ভব।’
আরও পড়ুন:
বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত নিরাপত্তারক্ষী অ্যাল্যান্ড এটিয়েনের পরিবারেও শোকের ছায়া। তার ভাই জানান, পরিবারের চেয়েও নিউ ইয়র্ক সিটিকে নিরাপদ রাখতে বেশি সময় দিতেন অ্যাল্যান্ড।
অ্যাল্যান্ডের ভাই বলেন, ‘আমার ভাই অ্যাল্যান্ড অনেক পরিশ্রমী ছিলেন। সময়মতো ঘুম থেকে উঠতেন এবং সর্বদাই কাজ করতেন। প্রতিদিন নিউ ইয়র্ক সিটিকে নিরাপদ রাখতেই ব্যস্ত থাকতেন। অ্যাল্যান্ড একাধারে একজন ভালো ভাই, বন্ধু, ছেলে, স্নেহশীল বাবা ছিলেন।’
যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে শক্তিশালী বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন করা জরুরি বলে মনে করছেন নিউ ইয়র্ক সিটির ডেমোক্র্যাটিক মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি। মেয়র হলে নিউ ইয়র্কবাসীর নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশের জন্য তহবিল বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
জোহরান মামদানি বলেন, ‘খুব স্পষ্ট করে বলতে গেলে এ প্রচারণার সময় আমি পুলিশকে তহবিল থেকে বঞ্চিত করছি না। আমি পুলিশকে তহবিল থেকে বঞ্চিত করার জন্য দৌঁড়াচ্ছি না। নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে আমি কাজ করবো।’
আরও পড়ুন:
গত সোমবার (২৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে নিউ ইয়র্কের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক পার্ক অ্যাভিনিউতে গুলি করে চারজনকে হত্যার পর হামলাকারী নিজেও আত্মহত্যা করে। এম-৪ রাইফেল দিয়ে হামলা চালানো ওই বন্দুকধারীর মানসিক সমস্যার রেকর্ড ছিলো। তবে এই সমস্যার কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়।