যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে ঘিরে তীব্র হচ্ছে বিতর্ক। নতুন টিকা নীতি, নেতৃত্ব এবং নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে তোপের মুখে পড়েন কংগ্রেসের এক শুনানিতে। কঠিন প্রশ্ন তুলেছেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান— উভয় পক্ষই।
প্রায় তিন ঘণ্টার শুনানিতে ডেমোক্র্যাট সদস্যরা অভিযোগ করেন, কেনেডি আমেরিকানদের টিকা পাওয়ার সুযোগ সীমিত করছেন। এই কথায় সুর মিলিয়েছেন লুসিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর বিল ক্যাসিডিও।
লুসিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর বিল ক্যাসিডি বলেন, ‘আমি প্রমাণস্বরূপ কিছু নথি জমা দিচ্ছি। আমি জোর দিয়ে বলবো মানুষের টিকার প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।’
মাত্র এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্টের জাতীয় জনস্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসির প্রধান সুসান মনারেজকে বরখাস্ত করেন কেনেডি। এর আগে তিনি টিকা সুপারিশ কমিটির সব সদস্যকে সরিয়ে নতুন করে নিয়োগ দেন, যাদের মধ্যে কয়েকজন টিকা–সমালোচক হিসেবে পরিচিত। এ নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ব্যাপক উদ্বেগ জানান।
ডেমোক্র্যাট সিনেটররা তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। রিপাবলিকানদের কেউ কেউ তার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তবে, শুনানি ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই কেনেডির প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘কেনেডি একজন ভালো মানুষ, তার উদ্দেশ্যও ভালো। তার নিজস্ব কিছু ভিন্ন ধারণা রয়েছে। আমিও তার মতোই চিন্তা করি।’
কেনেডির সিদ্ধান্ত ও বক্তব্য এরমধ্যেই স্বাস্থ্যখাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি তিনি একসঙ্গে সিডিসির ৬০০ কর্মীকে বরখাস্ত করেন। আর এর পরপরই স্বাস্থ্য কর্মীদের একটি বড় অংশ তাকে ভুল তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরির অভিযোগ করেছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র এ বছর কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হাম প্রাদুর্ভাব দেখছে। যদিও কেনেডি প্রকাশ্যে বলছেন টিকাই হাম প্রতিরোধের উপায়, তিনি একই সঙ্গে টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্যও করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টিকা কেড়ে নিচ্ছি না, বেশিরভাগ আমেরিকানরা নিকটবর্তী ফার্মেসি থেকে প্রয়োজনীয় টিকা পাবে।’
কেনেডিকে ঘিরে বিতর্ক চলতে থাকলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রতি সমর্থন ধরে রেখেছেন। ফলে আপাতত তার পদচ্যুতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।