সবুজ পাহাড়ে ঘেরা চারপাশ। মাঝখানে ছোট্ট গ্রাম রিজাল আলমা। অপরূপ এই গ্রামটি মরুর দেশ সৌদি আরবের আসির প্রদেশের। যেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করা বাড়িটিকে পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দিয়ে সাড়া ফেলেছেন তরুণ প্রকৌশলী মোহাম্মদ আল-আলমাই। মধুর স্বাদ নিতে আগ্রহী এমন দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে নিজের বাসস্থানকে সাজিয়েছেন মৌমাছির অভয়ারণ্যে।
৪ বছর আগে তিনতলা বাড়িটিকে হানি কটেজে রূপান্তর করায় প্রশংসিত তরুণ এই উদ্যোক্তা। মৌমাছির গুনগুন শব্দে বাড়ছে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুর আনাগোনা। একইসঙ্গে নির্ভেজাল মধুর স্বাদ নিতে পেরে দারুণ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন গ্রীসসহ ভিনদেশি পর্যটকরা।
পর্যটকদের একজন বলেন, ‘আমার দেশেও খুব ভালো মধু পাওয়া যায়। তবে আমরা সৌদি আরবের বিখ্যাত মধুর স্বাদ নিতে চেয়েছিলাম। এর জন্যই এখানে ছুটে এসেছি।’
আরেকজন বলেন, ‘এখানে আসার পর দারুণ অভিজ্ঞতা হলো। আমি সব ধরনের মধুর স্বাদ পেয়েছি। এটি নির্ভেজাল ছিল।’
আরও পড়ুন:
এই হানি কটেজটিতে উষ্ণ মৌসুমে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার দর্শনার্থীর ভিড় থাকেন। এমনকি মাত্র ৪ বছরে ১০০টি দেশ থেকে অন্তত ১২ লাখ দর্শনার্থী ভ্রমণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আল-আলমাই।
মোহাম্মদ আল-আলমাই তরুণ উদ্যোক্তা বলেন, ‘মৌমাছি আমাদের গ্রামীণ সম্প্রদায়ের সম্পদ ও ঐতিহ্য। যা আয়েরও উৎস। আমরা এটিকে বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছি।’
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০০০ মিটারেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত ঐতিহাসিক গ্রামটির এই হানি কটেজের আয়তন ৩০০ বর্গমিটারেরও বেশি। মৌমাছির লালনপালন ছাড়াও যেখানে রয়েছে বায়ুচালিত মধু শোধনাগার এবং একটি কাঠের কল। পাওয়া যায় ৫০ ধরনের বেশি মধু। দেশের পর্যটন খাত বিকাশে তারসহ অন্যান্য গ্রামীণ সম্প্রদায়ও একদিনে শক্তিতে পরিণত হবে বলে প্রত্যাশা মোহাম্মদ আল-আলমাইয়ের।
তিনি বলেন, ‘আমরা যা জোর দিয়ে বলতে চাই তা হল গ্রামীণ সম্প্রদায়গুলি একদিন পর্যটন, বিনোদন এবং বিনিয়োগের দিক পরিবর্তনে একটি শক্তিশালী শক্তি হয়ে উঠবে।’
পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে ভিশন টুয়েন্টি-থার্টির পথে এগুচ্ছে সৌদি আরব সরকার। এ আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে দর্শনার্থীর সংখ্যা তিনগুণ বাড়িয়ে প্রায় ৮০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে আসির প্রদেশের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আর দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ১১ কোটি ৬০ ভ্রমণপিপাসুকে স্বাগত জানিয়েছে সৌদি আরব। যা আগের বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি।