জুলাই ঐক্যের ৭ দাবি, না মানলে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি

জুলাই ঐক্যের সংবাদ সম্মেলন
দেশে এখন
0

আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে আওয়ামীপন্থি এবং জুলাই আন্দোলন ব্যর্থ করতে চেষ্টা চালানো চিহ্নিত আমলাদের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশসহ ৭ দাবি জানিয়েছে জুলাই ঐক্য। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ‘মার্চ টু সচিবালয়’সহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ (মঙ্গলবার, ২০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। পরে সংগঠনটির তরফ থেকে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তিও পাঠানো হয়।

তাদের ৭ দাবি হলো—

১. আগামী ৩১ মের মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত (সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত তালিকা) আওয়ামী লীগের সব দোসরদের বাধ্যতামূলক অবসর দিতে হবে।

২. তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি দেশের জনগণকে দেখাতে হবে।

৩. দেশের তথ্য পাচারকারী ছাত্রজনতার বুকে গুলি চালানো, নির্দেশকারী এবং সহযোগিতাকারী সব আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সকলের ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে।

৪. স্বৈরাচারের দোসর আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. আগামী ‘৩৬ জুলাইয়ের’ (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সব স্বৈরাচারের দোসরদের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

৬. আইনের ১৩২ ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেওয়া হয় না। আগামী ৩১ মের মধ্যে এই ধারা বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে।

৭. আগামী ৩১ মের মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কতজন কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছেন, তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।

এর আগে, আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে সরকারের প্রশংসা করে জুলাই ঐক্য জানায়, সরকার আ.লীগের কার্যক্রম যেভাবে নিষিদ্ধ করেছে, তা আমরা পুরোপুরি গ্রহণ করিনি। তারপরও সরকারকে আমরা এই উদ্যোগের জন্য স্বাগত জানিয়েছি।

সংগঠনটি জানায়, সরকার আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে যে গেজেট প্রকাশ করেছে, সে অনুযায়ী দলটির সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কিছু নেয়নি। গেজেট অনুযায়ী ১৪ দলের শরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

তাদের দাবি, জুলাই-আগস্টে শুধু নয়, গত সাড়ে ১৫ বছর সচিবালয়ের আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা যেভাবে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছিল; তারা এখনো সচিবালয়সহ বিভিন্ন স্থান নিয়ন্ত্রণ করছে। এখনো আ.লীগের অনেক এমপি-মন্ত্রী দেশে আছেন। সরকারের সেই আমলারাই তাদের সেফ এক্সিট দিচ্ছে। সর্বশেষ আবদুল হামিদের বিদেশগমন তার প্রমাণ।

সংবাদ সম্মেলনে সচিবালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় যেসব ম্যাজিস্ট্রেটরা ছাত্র-জনতার বুকে গুলি করেছে—এমন অভিযোগ উঠেছে, তাদের আংশিক তালিকা প্রকাশ করে জুলাই ঐক্য। শিগগিরই নিজস্ব ওয়েবসাইটে সব সেক্টরে থাকা ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা।

চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ, সচিবালয় ও প্রশাসন স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত এবং ১৩২ ধারা বাতিল বা সংশোধন না করলে; এর পর ছাত্রজনতা এবং জুলাইয়ের স্পিরিট ধারণকারী সব সংগঠনকে নিয়ে ‘মার্চ টু সচিবালয়’সহ আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানায় জুলাই ঐক্য।

এসএইচ