সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০২২-বি ব্যাচের ৪৪ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২৫-এ ব্যাচের ৮ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৫২ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন।
উল্লেখ্য, কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জন নারী এবং ৪ জন বিদেশি কর্মকর্তা রয়েছেন। কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে সেনাবাহিনী প্রধান বিভিন্ন বিষয়ে কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে পদক তুলে দেন।
সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে মিডশিপম্যান মেহেদী হাসান মৃধা, (এক্স), বিএন সকল বিষয়ে সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।
মিডশিপম্যান মো. মেহেরাব হক তনি, (এক্স), বিএন প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট রাজীব দত্ত, (শিক্ষা), বিএন কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।
এছাড়াও মিডশিপম্যান আবহরীরা এলবাদাবী আহমেদ আব্দেলনাইম, (এক্স), সুদান আর্মি, সেরা চৌকস বিদেশি মিডশিপম্যান হিসেবে এবারই প্রথমবারের মতো ‘বিএনএ আন্তর্জাতিক স্বর্ণ পদক’ লাভ করেন।
পরে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাগণ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান ব্রত নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন।
সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সেনাবাহিনী প্রধান অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ কমান্ডোদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর প্রগতিশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সমুদ্র সম্পদের সুরক্ষা, সমুদ্রে অপরাধ দমন ও সুশাসন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তায় দেশে-বিদেশে নৌবাহিনীর অংশগ্রহণ এবং ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় নৌবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানান।’
সেনাবাহিনী প্রধান ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নবীন কর্মকর্তাদের দেশপ্রেম ও কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
সততা, সঠিক নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তিনি নবীন কর্মকর্তাদের সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন।
পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ মহান দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নবীন কর্মকর্তা ও তাদের অভিভাবকবৃন্দকে তিনি আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের জন্য প্রশিক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও সদস্যগণকে তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাগণ, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।