রাত ৩টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর বহির্গমন পথের চিত্র এমন যে; ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই ফটকে বসে-দাঁড়িয়ে-ঝিমিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। যাত্রীদের একজন মোহাম্মদ হোসেন, গেলো রাতের ফ্লাইটেই তার কুয়েত যাওয়ার কথা। তবে তার জানা নেই যে, কেমন করে যাবেন তিনি। যুদ্ধের দামামায় তো স্বল্প ও মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলার ধোঁয়াতে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ আচ্ছন্ন।
সোমবার রাতে বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বিজি ৩৫১৭ জেদ্দা, কিউআর ৬৩৯ দোহা, ইকে ৫৮৫ দুবাই, রিয়াদের ৩৩৯-সহ ৮টি ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও বাহরাইন সোমবার মাঝ রাতেই আকাশসীমা বন্ধ করে। এতে দেশগুলোতে সব ধরনের বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমন প্রেক্ষাপটে ঢাকা থেকেও পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই চার দেশে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
বেশি বিপাকে পড়েছেন কাতারগামী ফ্লাইটের যাত্রীরা। এদিকে, কাতারের দোহাগামী একটি ফ্লাইট মাঝ আকাশ থেকে পথ পরিবর্তন করে ওমানের মাস্কাটে অবতরণ করে।
পরে সব যাত্রী নিয়ে রাতেই ফ্লাইটটি আবার ঢাকায় ফেরার কথা। সেই সাথে ইউএসবাংলা এয়ারলাইন্সের কাতারগামী একটি ফ্লাইট ও ভারতের আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
যাত্রীরা জানান, বেশ কিছু ফ্লাইট বিলম্বে ছেড়ে গেছে, যে কারণে বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের। তারা এও মনে করছেন, এই পরিস্থিতি দু’একদিনের মধ্যে সমাধানযোগ্য নয়।
সোমবার মধ্যরাতে এক বার্তায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত দোহা, দুবাই, আবুধাবি, কুয়েত এবং বাহরাইন হয়ে আগমন ও বহির্গমনকারী সব বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ থাকবে।
এই পরিস্থিতিতে দোহা, দুবাই, আবুধাবি, কুয়েত ও বাহরাইন রুটে ভ্রমণের পরিকল্পনায় থাকা যাত্রীদের নিজ নিজ এয়ারলাইন্স অফিসের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ভ্রমণের সময়সূচি পুনর্নির্ধারণে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।