আওয়ামীপন্থি আমলাদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি, তালিকায় যাদের নাম

জুলাই ঐক্য
রাজনীতি
0

৫ আগস্টের মধ্যে আওয়ামীপন্থি এবং জুলাই আন্দোলন ‘ব্যর্থ’ করতে চেষ্টা চালানো চিহ্নিত আমলাদের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে জুলাই ঐক্য। এরই মধ্যে জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালে ‘গুলি করতে নির্দেশ দেয়া’ ৯৫ ম্যাজিস্ট্রেট, সচিবালয়সহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৪৪ জন আমলার তালিকা প্রকাশ করেছে ৮০টি সামাজিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ে গড়ে উঠা জুলাই ঐক্য।

আজ (মঙ্গলবার, ২০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তালিকা প্রকাশ করা হয়। শহীদ মুহতাসির রহমান আলিফের বাবা মোহাম্মদ গাজীউর রহমান তালিকা পড়ে শোনান।

৪৪ আমলা হলেন—

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমূল আহসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহানা আহমেদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এমদাদুল্লাহ মিয়া, ভূমি আপিল বোর্ডের সচিব মো. ইব্রাহিম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. নাজমা মোবারেক, ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. মুশফিকুর রহমান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান, অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন সদস্য মো. রুহুল আমিন, দুর্নীতি দমন কমিশন সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন চেয়ারম্যান মো. আমিনুল আহসান, বিপিএটিসি র‌্যাকটর সচিব সাঈদ মাহবুব খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. মোকাব্বের।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাহদুর রহমান, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) ড. মো. শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টও (সচিব) ড. মো. ওমর ফারুক, শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব, এ.এইচ.এম শফিকুজ্জামান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসারন আফরোজ।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (চুক্তিভিত্তিক) মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান (চুক্তিভিত্তিক) মো. মুসলিম চৌধুরী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী।

বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক (সচিব) শরিফা খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), জাহেদা পারভীন, ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, প্লানিং কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) এ.এম আকমল হোসেন আজান, প্লানিং কমিশনের সদস্য, ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব) সুকেশ কুমার সরকার, মহিলা ও শিশুবিষয়ক সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ।

এসময় একতার বাংলাদেশের আহ্বায়ক প্লাবন তারিক বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে শুধু নয়, গত সাড়ে ১৫ বছর সচিবালয়ের আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা যেভাবে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছিল তারা এখনো সচিবালয়সহ বিভিন্ন স্থান নিয়ন্ত্রণ করছে। দুই হাজার প্রাণ ও ৩১ হাজার আহত ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার পেলেও আমাদের ব্যর্থতা, বিপ্লবী সরকার গঠন করতে না পারা। যে সুযোগটি নিয়েছে আওয়ামী লীগের দোসররা। দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন সহযোগিতা করছে কিছু আমলা ও প্রশাসনে থাকা কর্মকর্তারা।’

প্লাবন তারিক বলেন, ‘আমরা আজকে সচিবালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় যেসব ম্যাজিস্ট্রেট ছাত্র-জনতার বুকে গুলি করেছেন; রক্তাক্ত করেছে আমাদের জন্মভূমি, আমরা তাদের আংশিক তালিকা প্রকাশ করেছি। এটা প্রাথমিক তালিকা। শিগগিরই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সব সেক্টরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ কালচারাল ফ্যাসিস্ট, শিক্ষাঙ্গন, চিকিৎসাঙ্গন, আইনাঙ্গন এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সেক্টরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘ঢাকার একাধিক স্থানে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রশাসন যদি সরব থাকত, তাহলে এই সাহস পেত না। এখনও আওয়ামী লীগের অনেক এমপি-মন্ত্রী দেশে আছেন। সরকারের সেই আমলারাই তাদের সেফ এক্সিট দিচ্ছেন। সর্বশেষ আব্দুল হামিদ তার প্রমাণ।’

এনএইচ