বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় মানবিক সাহায্য বাড়ানোর বিষয়ে ব্রিটেনের অল পার্টি পার্লামেন্টারিয়ান গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা চলছে। লন্ডন স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় ড. ইউনূসের প্রথম দিনের সফরের কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু খুব গুরুত্ব পেয়েছে। এই ১০ মাসে আমাদের কী কী সাফল্য আছে; সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এটা খুবই সৌহার্দপূর্ণ আলাপ ছিল। তারা অনেকগুলো প্রশ্ন করেছেন, চীফ অ্যাডভাইজার সবগুলোর উত্তর দিয়েছেন।’
এ ছাড়া, আগামী ১৩ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে কী বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হবে, তা পরিষ্কার করেননি প্রেস সচিব।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উনারা উনাদের মত করে বসবেন, আলাপ করবেন। বাংলাদেশের সমসাময়িক বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে, ইলেকশন, জুলাই চাটার্ড হওয়া এসব যেকোনো বিষয় নিয়ে আলাপ হতে পারে।’
ড. ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তাই শিডিউল নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একজন এমপি এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কানাডাতে। তারপরেও আমাদের কথা হচ্ছে। শিডিউল মিলে গেলেই মিটিং হবে।’
গত ৪ জুন সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছিলেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। চিঠির জবাব দেয়ার বিষয়ে প্রেস সচিব জানান, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করা হবে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টার দিকে লন্ডনের একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এয়ারবাসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়ার্শ। বৈঠকে উড়োজাহাজ প্রযুক্তি, সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
লন্ডনের সময় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মেনজিস অ্যাভিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা, নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং অপারেশনাল কার্যক্রমের উন্নয়ন নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
এবারের সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটেনর রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস। এসময় ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন তিনি। বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তাকে এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। আগামী ১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে দেয়া হবে এই পুরস্কার।
উল্লেখ্য, ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী বিমান। সেখান থেকে সেন্ট্রাল লন্ডনের দ্য ডরচেস্টার হোটেলে যান তিনি। এসময় প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সফর শেষে আগামী ১৪ জুন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।