ঢাকায় দূষণ থেকে নিস্তার নেই, প্রশান্তির নিশ্বাসেও জটিল রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি

ঢাকায় রাতের দূষনের চিত্র
পরিবেশ ও জলবায়ু
বিশেষ প্রতিবেদন
0

বিশ্বে বায়ুদূষণের ঝুঁকিতে থাকা শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান শীর্ষ পোনেরোর মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়। দিনের মতো রাতেও ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকছে না। পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলেন, বিকেল ৫টা থেকে অফিস ছুটি হলে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়, সঙ্গে বাড়তে থাকে বায়ুদূষণ। এ ছাড়া সন্ধ্যা ৬টার পর দূষণ বাড়তে থাকে আবহাওয়াগত কারণে। অস্বাস্থ্যকর এই বায়ুতে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শ্রমজীবীসহ নগরবাসী।

কখনো রোদ আবার এর কিছু সময় পরেই বৃষ্টি, বাতাস। বর্ষায় মাঝেমধ্যে উত্তপ্ত আবহাওয়ায় রাতের নগরীতে ধুলোবালিও উড়ছে বেশ।

জলবায়ু পরিবর্তনের মূলে উন্নত দেশগুলো দায়ী হলেও এর প্রভাব পড়ছে ঢাকার মতো ঘনবসতির শহরের ওপর। এখানে বাড়ছে মানুষ, চাকা ঘুরছে কলকারখানার— সবকিছু মিলিয়ে বাড়তি চাপে রাতেও জেগে থাকছে ঢাকা। যে কারণে সহনীয় মাত্রায় নেই দূষণ।

গবেষণায় দেখা গেছে, সূর্যাস্তের পর বায়ুপ্রবাহ কমে, আর্দ্রতা বাড়ে। এ কারণে ভাসমান ধুলাবালি বাতাসে জমে থাকে। ফলে বায়ুদূষণ পরিমাপক যন্ত্রে দূষণ ধরা পড়ে বেশি।

পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায়, চলতি বছরের ৩ জুন আইকিউএয়ারের মানদণ্ডে এ নগরীর বায়ুর স্কোর ছিল ১০৪, যা সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১ সপ্তাহ পরে ১১ জুন তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪ তে।

নগরবাসীরা বলছেন, রাতে বাইরে বুকভরে শ্বাস নেয়া যায় না, নাকে চোখে সমানতালে ধুলা জমতে থাকে।

ঢাকাবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘ধুলাবালির কারণে মাঝেমধ্যেই লেবাররা অসুস্থ হয়ে যায়।’

এ বিষয়ে পরিবেশবিদরা জানান, গেল ৯ বছরে ঢাকায় দ্রুতগতিতে করে বেড়েছে রাতের দূষণ। এ থেকে রেহাই পেতে ইটভাটা, শিল্পকারখানার কঠিন বর্জ্য পোড়ানো থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সড়কে ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন বন্ধ রাখতে হবে।

পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত ৯ বছরের বায়ুর মান বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, রাত ১২টা থেকে ১টার সময় বায়ু মান সূচক থাকে গড়ে ১০৬ বা এর কাছাকাছি, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।’

এদিকে বিগত মাসগুলোতে ঘুরেফিরে বিশ্বে শীর্ষ বায়ুদূষণের শহরের তালিকায় উঠে এসেছে ঢাকার নাম। রাজধানীর মধ্যে যেসব এলাকায় বায়ুর মান মারাত্মক দূষিত, সেগুলোর মধ্যে আছে কল্যাণপুর, মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং। বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা ও জীবাশ্ম জ্বালানির পারিপার্শ্বিক প্রভাবে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৬৫ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।

এসএইচ