ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্য আনলেও নীতি নির্ধারণী জায়গায় নারীদের অবস্থান শূন্য

এখন মাঠে
0

ফুটবল থেকে ক্রিকেট-ক্রীড়াঙ্গনে বারবার দেশের জন্য সাফল্য বয়ে এনেছেন নারীরা। কিন্তু, এত সাফল্যের পরেও, নীতি নির্ধারণী জায়গায় তাদের অবস্থান শূন্যের কোটায়। এজন্য অবশ্য দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক নৈরাজ্য আর পুরুষতান্ত্রিকতাকে দুষছেন নারী ক্রীড়াবিদরা।

হাফপ্যান্ট পরে ফুটবল খেলা একটা সময় যেখানে অবিশ্বাস্য ঘটনা- সেই ময়মনসিংহের অজপাড়া কলসিন্দু গ্রাম থেকে উঠে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়েছে দেশের নারী ফুটবলাররা। শুধু ফুটবল কেন- ক্রিকেট, ভারোত্তোলন, অ্যাথলেটিক্স, ব্যাডমিন্টনের মতো খেলাধুলায়ও নারীরা দেশ থেকে বিদেশে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

তবে সাফল্য আসলেও নীতি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত নেয়ার জায়গাতে দেশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব অনেকটাই কম। বিগতে সময়ে এই দৃশ্য সবারই দেখা- এমনকি দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও এই চিত্রের বদল হয়নি এতটুকুও।

বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাবেক শাটলার ও কোচ এলিনা সুলতানা বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আপনি খেয়াল করবেন এখন রাজনীতিটা অনেক বেশি। সচিব এই লেভেলের লোকদের এখানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেয়া হয়।’

বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সাবেক সাঁতারু ও কোচ লায়লা নূর বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সুইমিং টেকনিক কমিটির মেম্বার ছিলাম। ওখানেও আমি দেখেছি এবং কাজ করেছি। কিন্তু আমাদের দেশে যখন আশা হয় তখন কী করে আমাকে পেছনে ফেলবে সেটা হচ্ছে তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা।’

গোটা ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের মেধাকে মূল্যায়ন না করায় দিনশেষে নিজেদের ক্ষতিই হচ্ছে বলে মনে করেন সাবেক খেলোয়াড় এবং কোচরা।

লায়লা নূর বলেন, ‘সুইমিংয়ের সাথে জড়িত ছিল না, যারা চেয়ারে বসলে অন্যদের দিয়ে কাজ করাবে এরকম লোকদের ফেডারেশনের বড় বড় জায়গা দিয়ে দেয়া হয়। ফেডারেশনে কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। একটা ধস কিন্তু এসে গেছে।’

বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাবেক শাটলার ও কোচ এলিনা সুলতানা বলেন, পুরুষ সমাজের যে একটা চিন্তা আছে আমরা চাইলেই সেটা পরিবর্তন করতে পারবো না। অনেক জায়গায় কোয়ালিফাইড ফিমেইল প্লেয়ার বলেন, কোচ বলেন আছে। কিন্তু তাদের ফিমেল হিসেবে ট্রিট করা হয়। এই যে মনমানসিকতাটা যতক্ষণ না পর্যন্ত পরিবর্তন হবে ততক্ষণ কোনো সেক্টরের টপ লেভেলে আমরা নারীদের পাব না।’

যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যে অপশক্তি ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে- তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।

তিনি বলেন, ‘মেন্টালি স্ট্রং থাকতে হবে, দৃঢ় মনোবল থাকতে হবে, এইম, অ্যাম্বিশন, টার্গেট থাকতে হবে। তাহলেই এগিয়ে যেতে পারে।’

বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটির সাবেক অ্যাথলেট ও সদস্য ফিরোজা খাতুন বলেন, ‘কাউকে দোষ দিতে চাই না, ওটা আমাদের আদায় করে নিতে হবে। আজ না হোক, ২ দিন ১০ দিন পরে করতে হবে। একদিন না একদিন এটার ফল আসবে। কাউকে হালটা ধরতে হবে।’

এএইচ