১৯৬৬ সালে বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরে নির্মিত হয় জীবনানন্দ দাস স্টেডিয়াম। এরপর ২০০৬ ফ্লাডলাইট, মিডিয়া সেন্টার, পাঁচতলা প্যাভিলিয়ন নির্মিত হলেও আন্তর্জাতিক কোনো আসর হয়নি স্টেডিয়ামটিতে। পরবর্তীতে ২০২১ সালে প্রায় ৬৫ কোটি টাকায় আধুনিকায়ন প্রকল্প শুরু হলেও কাজ চলছে ঢিমেতালে।
আয়তনের দিক থেকে দেশের অন্যতম বড় ও পুরনো হলেও এতদিন অবহেলায় ছিল বরিশাল স্টেডিয়াম। আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবেও প্রসার ঘটেনি। এমনকি প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল, ক্রিকেট এবং প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ নিয়মিত হয় না এখানে। খেলোয়াড়দের মান উন্নয়নে স্থানীয় লিগ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্ট আয়োজন করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দল-মত নির্বিশেষে আমাদের সবার মাঠ এটা। যত দ্রুত সম্ভব এ মাঠকে প্রস্তুত করে এখানে আন্তর্জাতিক এবং লোকাল ক্রিকেট দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে।’
আরেকজন বলেন, ‘ডমেস্টিক লিগ হচ্ছে না দীর্ঘদিন যাবৎ। এ কারণে আমরা খেলোয়াড় তৈরি করতে পারছি না।’
দীর্ঘদিন স্টেডিয়ামে খেলতে না পেরে হতাশ বরিশালের তরুণ ক্রিকেটাররা। স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন হলে, এটি আন্তর্জাতিক মানের খেলাধুলার নতুন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হবে বলে আশা তাদের।
বিসিবির অপারেশন্স ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীস আহমেদ বলেন, ‘এখানে এত সুন্দর স্টেডিয়াম আছে, এত সুন্দর ফ্যাসিলিটিস আছে—কিন্তু যদি খেলাটাই না থাকে তাহলে তো আমরা সেই ফ্যাসিলিটিসটা কাজে লাগাতে পারছি না। সেক্ষেত্রে বোর্ড সভাপতির কাছে একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার দাবি যে, এখানকার লোকাল ক্রিকেটটা আমরা যদি প্রতিনিয়ত আয়োজন করতে পারি, তাহলে এখান থেকে অনেক লোকাল ক্রিকেটার বের করতে পারবো।’
এদিকে বরিশালের মাটিতে প্রথমবারের মত ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি। দেশের অন্যতম বড় স্টেডিয়ামে এক দশকের বেশি খেলাধুলা বন্ধের খবর শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আবারও মাঠে খেলাধুলা ফেরানোর নানা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘শুনতে কষ্ট হচ্ছে যে এখানে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে কোনো লিগ হয় না। একটা লিগ না হলে ছেলেদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে। খেলা না হওয়ার কারণে এখানকার হাজার হাজার খেলোয়াড়ের প্রতিভা নষ্ট হচ্ছে। আমরা খুব চেষ্টা করছি যে, কীভাবে এ মাঠ উন্নয়ন করে আমরা আরো অ্যাকটিভ ক্রিকেট জেলা হিসেবে পরিণত করতে পারি।’
আধুনিকায়ন শেষে মাঠে খেলাধুলা ফেরানোর পাশাপাশি স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে পরিচিতি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।