ইন্টার মায়ামি এবং পিএসজির এই ম্যাচের মাহাত্ম্য শুধু ম্যাচের আবহেই থেমে থাকছে না। আছে একগুচ্ছ পুনর্মিলনী আর গুরু-শিষ্যের লড়াইও। সবচেয়ে বড় লড়াইটা অবশ্য লিওনেল মেসি এবং লুই এনরিকের মাঝে। বার্সেলোনার ২০১৫ সালের স্মরণীয় ট্রেবল জয়ী মৌসুমের নেপথ্যে ছিল মেসি এবং এনরিকের যুগলবন্দি।
স্প্যানিশ কোচের অধীনে মেসি খেলেছিলেন ১৫৮ ম্যাচ। করেছিলেন ১৫৩ গোল। মেসিকে ফলস নাইন থেকে সরিয়ে উইং থেকে আরো বেশি কার্যকর করে তুলেছিলেন এই এনরিকে। পুরাতন শিষ্যের মুখোমুখি হওয়ার আগে তাই এনরিকে নিশ্চয়ই আগের স্মৃতিগুলো ঝালিয়ে নেবেন একবার, এবার প্রতিপক্ষ হিসেবে।
এনরিকের স্মৃতিতে অবশ্য আসবে আরো কিছু নামও। বার্সেলোনায় তিনি শিষ্য হিসেবে পেয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ, জর্দি আলবা, সের্হিও বুসকেতসদের। ছিলেন হ্যাভিয়ের মাশ্চেরানো নিজেও। এদের মধ্যে সবাই ক্যারিয়ারের গোধূলি বেলা পার করলেও মাশ্চেরানো চলে এসেছেন কোচের ভূমিকায়। ইন্টার মায়ামির কোচ হিসেবে আজ সাবেক গুরু লুইস এনরিকের পরীক্ষা নেবেন মাশ্চেরানো। এনরিকের অধীনে বার্সেলোনায় ১৩৮ ম্যাচ খেলেছিলেন সাবেক এই আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার।
পুরাতন হিসেব আছে মেসি-পিএসজির মাঝেও। বার্সেলোনা ছাড়ার পর পিএসজিতেই ২ মৌসুম পার করেছেন। ৭৫ ম্যাচে ৩২ গোল এবং ৩৫ অ্যাসিস্ট ছিল ফ্রেঞ্চ ক্লাবটির হয়ে।
শক্তিমত্তার বিচারে অবশ্য ইন্টার মায়ামির তুলনায় অনেকটায় এগিয়ে থাকছে পিএসজি। দলের মাঝমাঠে ভিতিনহা, ফ্যাবিয়ান রুইস আর ফরোয়ার্ড লাইনে দিজেরে দুয়ে, খিঁচা খাভারাৎসখেলিয়ারা নিজেদের দিনে যেকোনো প্রতিপক্ষকেই দুমড়ে দিতে প্রস্তুত। মায়ামির বিপক্ষে ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ের পাশাপাশি তাই মাঠের পারফরম্যান্সেও অনেকটাই এগিয়ে থাকবে পিএসজি
মায়ামির জন্য সবচেয়ে বড় শক্তির নাম অবশ্যই লিওনেল মেসি। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই তারকা যেকোনো সময়েই বদলে দিতে পারেন ম্যাচের ভাগ্য। মাঝমাঠে ভিতিনহা, রুইজ কিংবা নেভেসদের মত তরুণদের বিপক্ষে সের্হিও বুসকেতস ঠিক কীভাবে খাপ খাইয়ে নেবেন, তার ওপরে অনেকটাই নির্ভর করবে মায়ামির ভাগ্য। আর গোলবারের নিচে অভিজ্ঞ উসতারিকে দিতে হবে বড় পরীক্ষা।
উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে ইউরোপিয়ান কোনো দলকে হারানো প্রথম ক্লাব ইন্টার মায়ামি। চলতি আসরেই পোর্তোকে হারিয়ে সেই ইতিহাস লিখেছিল মেসি-সুয়ারেজরা। নিজেদের পুরাতন গুরু লুইস এনরিকের বিপক্ষে মায়ামির অভিজ্ঞ তারকারা এমন কিছু আবার করতে পারেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।