দেশে ফিরে নতুন লক্ষ্যের কথা জানালেন নারী ফুটবলরা

ফুটবল
এখন মাঠে
1

ইতিহাস গড়ে দেশে ফিরেছে জাতীয় নারী ফুটবল দল। সাত ঘণ্টার দীর্ঘ বিমানযাত্রার পরও ক্লান্তির লেশ মাত্র নেই। বরং হাতিরঝিলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আফঈদা-ঋতুপর্ণারা শোনালেন নতুন লক্ষ্যের কথা। জানালেন এশিয়ার পর তাদের চোখ এখন অলিম্পিক আর বিশ্বকাপের মঞ্চে। তবে এই যাত্রায় তারা পাশে চান দেশের সর্বস্তরের মানুষকে।

'মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম, মোরা বিধাতার মতো নির্ভয়, মোরা আকাশের মতো বাধাহীন'।

কলসিন্দুর কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত মঞ্চে! বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের দলকে এমন নানা পঙক্তি বা উপমা বিশেষায়িত করা যায়। প্রতিবন্ধকতা জয় করে প্রতিনিয়ত ইতিহাস গড়ার খেলায় মেতে ওঠা যেন ঋতুপর্ণা-তহুরা খাতুনদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা পেয়ে অভ্যস্ত নারী ফুটবল দলের এবারে সংবর্ধনা হয়ত তেমন কিছুই নয়। তবে বিমানবন্দর থেকে হাতিরঝিল, সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে গুণগুণ করতেই পারেন, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ চরণগুলি। প্রায় সাত ঘণ্টার ফ্লাইট তবে আফঈদাদের যেন ভ্রমণ ক্লান্তি বলে কিছু নেই। নতুন ইতিহাসকে সঙ্গী করে দেশে ফেরার পর ঋতুপর্ণা -আফঈদা দিলেন বিশ্বজয়ের আশ্বাস।

আফঈদা খন্দকার বলেন, ‘এখানে উপস্থিত সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এত রাতে আমাদের রিসিভ করার জন্য। এত সুন্দর একটা আয়োজন করার জন্য। আজকের আমাদের এ সাফল্য একদিনে আসেনি।’

ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা জানে কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে ফাইট করতে হয়। আপনারা আমাদের উপর বিশ্বাস রাখবেন। আমরা আপনাদের নিরাশ করবো না। শুধু এশিয়ার না, আমরা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশেকে নিয়ে যেতে চাই।’

রোম একদিনে তৈরি হয়নি। প্রবাদটা কমবেশি সবার জানা। দেশের ফুটবলে এমন গৌরবগাঁথা বয়ে নিয়ে আসার মাস্টারমাইন্ড কোচ পিটার বাটলার কৃতিত্ব দেয়ার পাশাপাশি কঠিন সময়ের রোমন্থন করতে গিয়ে প্রবাদটাই যেন তুলে ধরলেন।

নারী ফুটবলারদের অর্জন অসাধারণ, গৌরবের, অনুপ্রেরণার। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ কিংবা সাবেক ফুটবলার আমিনুল হকদের অভিব্যক্তি এমনই। তারা বিশ্বাস করেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারাই একদিন বিশ্বজয় করবে।

মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী বলেন, ‘আমরা যদি প্রোপারলি তাদের সাপোর্ট দিতে পারি তারা অনেকদূর যাবে। আমি এখনই বিশ্বকাপ বলতে চাই না। কিন্তু তারা সেখানে যাবে।’

আমিনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল যে সাফল্য অর্জন করেছে তা অনেক বেশি প্রেরণার, অনেক বেশি উৎসাহের।’

সংবর্ধনা প্রতিশ্রুতি, বর্ণিল আয়োজন এসবে নারী ফুটবলাররা এখন বেশ অভ্যস্ত। তারা অভ্যস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার অভিজ্ঞতায়। বেতন-বোনাসের অনিশ্চয়তায়।নিরাপদ খেলার জায়গার অপ্রতুলতায়। প্রাপ্য সম্মানের জন্য যুদ্ধ করতে। নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে যারা বারবার দেশকে সাফল্যে রাঙায় এবার সময় এসেছে তাদের প্রাপ্যটা সত্যিকার অর্থেই বুঝিয়ে দেয়ার।

এসএস