মৌলভীবাজারে ধানে চিটা রোগ; বিপাকে কৃষক

মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারে চিটা ধরা ধানক্ষেত
এখন জনপদে , গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

বৈরি আবহাওয়া, নিম্নমানের কীটনাশক ও সারের কারণে ধানে চিটা রোগ হওয়ায় বিপাকে মৌলভীবাজারের চাষিরা। অনেকেই ধান কেটে জমিতেই রেখে দিয়েছেন। চাষিরা যখন আমনের ক্ষতি বোরোতে মেটানোর কথা ভাবছেন, তখনই বাঁধ সাধলো এই চিটা রোগ। মাঠের পর মাঠ ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষিরা দুষছেন কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।

মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাউয়াদিঘী ও হাইল হাওরের চারপাশে বোরো ধানের সমাহার। তবে বোরো ধানে হানা দিয়েছে চিটা রোগ। টানা খরা, অনাবৃষ্টি এবং নিম্নমানের কীটনাশক ও সারের কারণে হাওরের জমিতে ধান পোকা ও চিটার কবলে পড়েছে। বোরো ধানের প্রতিটি ছড়ায় পর্যাপ্ত ধান দেখা গেলেও, সেই ধান কাটার পরে দেখা মিলছে চিটার। ফলে হুমকির মুখে হাওরপারের বোরো ধানের ফলন।

সদর উপজেলার পাড়াশিমইল গ্রামের কৃষক শিপু মিয়া। কাউয়াদিঘী হাওর এলাকায় প্রায় ২০ বিঘা জমিতে করেছেন বোরো চাষ। কিন্তু ধান কেটে তাতে শিষ না থাকায় জমির আইলেই রেখে দিয়েছেন।

কৃষক শিপু মিয়া বলেন, 'আমার ভেতরটা ফেটে যায়, আমি হাওরের মাটিতে আমার ধানক্ষেতে গিয়েছি, আমার ফসল নাই। আমি নিরুপাই।'

শিপুর মত এ অঞ্চলের অন্য চাষিরাও সরবরাহ করা কীটনাশক ও সারের নিম্নমান এবং কৃষি বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করলেন।

কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, 'আমরা কৃষি অফিসেও গিয়েছিলাম,আমাদের সমস্যার সমাধান পেতে। কিন্তু সেখান থেকে আমরা কোনো সমাধান পাইনি।'

অভিযোগ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধেও। কৃষকরা বলছেন, পাউবো ঠিকমতো সেচের ব্যবস্থা করলে প্রায় একশত একর জমির ধান চিটা থেকে রক্ষা পেত। এজন্য আমরা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।'

এছাড়াও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি এবং হঠাৎ বৃষ্টি হলে ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কৃষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে ধান চাষের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথা জানালেন। আর কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ধানে চিটা রোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের কারো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলিদ বলেন, 'আমাদের যে ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপগুলো রয়েছে রয়েছে সেগুলোকে আমরা নতুন করে রিফর্ম করার চেষ্টা করছি। এই সমস্যার কারণে আমাদের পানির বণ্টনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।'

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, 'মাঠ পর্যায়ে যে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা রয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই এ পরামর্শ দেব যেন কৃষকরা এইধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সে বিষয়টা দেখার জন্য।'

জেলায় এ বছর ৬২ হাজার ১৪০ হেক্টর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ২৪০ হেক্টর।

এসএইচ