আজ (শুক্রবার, ১১ এপ্রিল) বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘটের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের যুবকেরা একত্রিত হয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে এই জলবায়ু ধর্মঘট এবং সমাবেশ করে। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে উপকূলের জীবন, প্রকৃতির দান; জলবায়ু ন্যায্যতা, আমাদের অধিকার, জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত কর।
সবুজ পৃথিবী রক্ষা কর, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ক্লাইমেট জাস্টিস, কার্বন নিঃসরণ কমাও, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচাও, জলবায়ু তহবিলের সঠিক ব্যবহার চাই ইত্যাদি স্লোগান লেখা ছিল।
যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম (এসএসএসটি) এর আয়োজনে এই ধর্মঘটে অংশ নেন শ্যামনগর উপজেলা যুব স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয় কমিটি, সবুজ সংহতি, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বারসিক।
এসএসএসটি পদ্মপুকুর ইউনিটের সভাপতি ধীরাজ কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। এর ফলে এখানকার মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে। তারা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। জলবায়ু তহবিলের অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবিও জানান তারা।
পরিবেশ কর্মী ও যুব জলবায়ু যোদ্ধা স.ম ওসমান গনী সোহাগ বলেন, 'তথাকথিত উন্নত এবং ধনীদেশগুলো কার্বন নির্ভর বিলাসী জীবন ত্যাগ করে পর্যন্ত জলবায়ু তহবিল জলবায়ু সংকটে নিপতিত দেশগুলোতে বিনা শর্তে দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে। ধনী দেশগুলোর কোন ধরনের জলবায়ু ঋণ আমরা মেনে নিবো না। আমরা আমাদের অধিকার চাই, জলবায়ু ন্যায্যতা চাই, আমরা এই ধরণীকে বাঁচাতে চাই।'
যুবকদের এই ধর্মঘট স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন সবুজ সংহতির সদস্য ও পদ্মপুকুর ইউপি সদস্য উত্তম কুমার মন্ডল, এসএসএসটির সদস্য সচিব মো. সাইদুল ইসলাম, বারসিক এর কর্মসূচি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মন্ডল, জলবায়ু যোদ্ধা মারুফ হোসেন মিলন, উন্নয়ন কর্মী বরষা গাইন, উপকূলীয় যুব সবুজ আন্দোলনের আহ্বায়ক ওবায়দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
এই জলবায়ু ধর্মঘটটি উপকূলীয় অঞ্চলের যুবকদের জলবায়ু ন্যায্যতা ও তহবিলের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাদের এই আন্দোলন হয়তো নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করবে।