লবণের দাম ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, দুশ্চিন্তায় চামড়া ব্যবসায়ীরা

যশোরে চামড়া ব্যবসা পরিস্থিতি
অর্থনীতি
এখন জনপদে
1

ঈদুল আজহা এগিয়ে এলেও যশোরের রাজারহাটে নেই চামড়া সংগ্রহের তোড়জোড়। ট্যানারি মালিকরা দীর্ঘদিন বকেয়া পরিশোধ না করার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এ ছাড়া বেড়েছে লবণের দাম ও শ্রমিকের মজুরি। তাই এবার ঈদুল আজহায় চামড়া ব্যবসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। তবে বাজার স্থিতিশীল ও চামড়া পাচার বন্ধে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম চামড়ার হাট যশোরের রাজারহাট। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদীসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা চামড়া বেচাকেনা করেন এখানে। তবে ঈদুল আজহার সময় ঘনিয়ে আসলেও এ বছর চামড়া সংগ্রহের তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই এ হাটে।

এ হাটের চামড়া ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে তার বকেয়া সাড়ে ৭ লাখ টাকা। সাড়ে তিন বছর পার হলেও টাকা পরিশোধ করেননি ট্যানারি মালিকরা। একই অবস্থা এই মোকামের অন্য ব্যবসায়ীদেরও।

রাজারহাটের চামড়া ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সাড়ে তিন বছরে আজও পর্যন্ত আমার ধারে দেয়া ৭ লাখ টাকা আদায় করতে পারছি না। আমরা এখন কী করবো?’

আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের বাৎসরিক লেনদেনের সম্পূর্ণটা যদি দিয়ে দেয়, তাহলে প্রভাবমুক্তভাবে আমরা ব্যবসা করতে পারি।’

চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, বকেয়া টাকা প্রাপ্তির পাশাপাশি ঋণ সুবিধা পেলে সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব। একইসঙ্গে দাবি জানান ইউরোপের বাজার ধরতে সরকারি উদ্যোগ নেয়ারও। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় ভারতে চামড়া পাচারের শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘দুই-তিন বছর যাবত দেখছি যে সরকার চামড়া মালিকদের সাথে বসে একটা রেট নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু এই রেটটা শেষ পর্যন্ত থাকে না।’

এদিকে লবণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১৫ দিনের ব্যবধানে ৭০ কেজির এক বস্তা লবণের দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা। পাইকারিতে বেশি দরে কেনায় খুচরা পর্যায়েও চড়া দাম।

চামড়ার বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ও পাচার রোধে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কোরবানির চামড়া যেন পাচার হতে না পারে, সেজন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আমাদের যারা কোর কমিটি আছে তাদের সঙ্গে আমরা সভা করেছি। সভায় আমরা সর্বোচ্চ যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি তা হলো, আমাদের এই অঞ্চল থেকে, আমাদের সীমান্ত দিয়ে কোনো চামড়া পাচার হবে না। সেজন্য আমাদের বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) এবং গোয়েন্দা সংস্থা সতর্ক অবস্থায় আছে।’

চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির দেয়া তথ্য মতে, হাট ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। ঈদ পরবর্তীতে হাতবদল হয় প্রায় শত কোটি টাকার চামড়া।

এসএইচ