সাতক্ষীরায় মশার দাপট, ডেঙ্গুর আগেই আতঙ্কে নগরবাসী

সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল
এখন জনপদে
0

সাতক্ষীরা শহরে মশার উপদ্রব ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ডেঙ্গুর মৌসুম শুরুর আগেই শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এমন পরিস্থিতিতেও মশা নিধনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষকে। জনসচেতনতায় নেই প্রচারণাও।

বর্ষা শুরু হতেই মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ সাতক্ষীরার মানুষ। শহরের অলিগলি তো বটেই, হাসপাতাল, বাজার, এমনকি বাসাবাড়িতেও এখন দিনরাত মশার রাজত্ব। আর এর সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুর ভয়।

খোলা ড্রেন, নালায় জমে থাকা পানি আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু বাহক এডিস মশা। পলাশপোল, ইটাগাছা, সুলতানপুর, কাটিয়া, টাউন বাজার ও সদর হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এদিকে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় শহরজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ।

স্থানীয়রা জানান, পানি অনেক ময়লা। এজন্য অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মশার উপদ্রবে ঘুমানো যায় না। মশা নিধনের জন্য যে কার্যক্রম দরকার সে কার্যক্রম থেকেও পৌরসভা করছে না। কেন করছে না তা আমাদের জানা নেই।

এলাকায় খালি চোখেই দেখা যায় মশার লার্ভা। এছাড়া প্লাস্টিক কাপ, নারকেলের খোসা কিংবা পলিথিনে জমে থাকা পানিই হচ্ছে ডেঙ্গু বিস্তারের উৎস। এতো কিছুর পরও পৌরসভার পক্ষ থেকে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। নেই কোনও নিয়মিত স্প্রে, নেই ফগিং কার্যক্রম।

এলাকাবাসীরা জানায়, মশার অনেক উৎপাত কিন্তু পৌরসভা থেকে এসব দেখে না। মশা নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় স্প্রে, ফগিং কার্যক্রমের ব্যবস্থা। মশার কামড়ে আমাদের বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কয়েকজন। নাগরিক নেতারা বলছেন, এখনই যদি ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘ইতোমধ্যে মশা নিধনের ব্যবস্থা যদি পৌরসভা না করে তাহলে এই ডেঙ্গু ও করোনা মহামারী আকার ধারণ করবে। এজন্য আমরা আবেদন জানাচ্ছি দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করার।’

সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় তিন লাখ মানুষের বাস। অথচ মশা নিধনে পৌরসভার রয়েছে মাত্র দুটি ফগার মেশিন। যা দিয়ে পর্যায়ক্রমে মশা নিধনে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কোন কর্মকর্তা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।

সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় আমরা ওষুধ ছিটিয়ে থাকি। আমি স্বীকার করবো প্রকোপের যেই পরিমাণ সে অনুযায়ী আমাদের ওষুধ পর্যাপ্ত নেই কিন্তু আমাদের চেষ্টা চলমান রয়েছে।’

মশার এই ভয়াবহ উপদ্রব ডেঙ্গুর আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। তাই সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি চলে যেতে পারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখনই শহরজুড়ে মশা নিধনে পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক উদ্যোগ নেয়ার দাবি শহরবাসীর।

ইএ