তিনি বলেন, ‘চেয়ার পেয়ে বিপ্লবীদের ভুলে গেলে বার বার অপদস্থ হতে হয়। আমার ছেলে কোনো দলের জন্য নয়, দেশের জন্য আন্দোলনে গিয়েছিল। ৪ আগস্ট তার শরীরে হাত দিয়ে শুধু রক্ত আর রক্ত দেখেছি।’
শ্রাবণের মা বলেন, ‘আমার ছেলে আন্দোলনে যাওয়ার আগে আমার কাছ থেকে একটা হিজাব চেয়ে নেয়। সালাম করে বলে, ‘আমরা না গেলে কে যাবে? দেশটা আমাদের।’ আমি মানা করেছিলাম, সে শোনেনি। আজ অনেকে পাশে দাঁড়াতে চায়। আমাদের সন্তানদের রক্তের ওপর নতুন বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই, কারণ আমরাই এদেশের মালিক।’
শ্রাবণের শরীরে গুলি লাগার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মহিপালের ইত্যাদি হোটেলের সামনে প্রথম দুটি গুলি খায়, পরে পাসপোর্ট অফিসের সামনে আরও চারটি গুলি লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এছাড়া সেদিন মসজিদের ইমামকে বাধ্য করা হয়েছিল যেন তিনি বাইরে না বলে শ্রাবণের কয়টা গুলি লেগেছে।’
বিচারের বিষয়ে আক্ষেপ নিয়ে শ্রাবণের মা ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আমরা সন্তান হত্যার বিচার চাই অথচ এখনও কিছুই হয়নি। এর জন্য আমাদের বারবার রাস্তায় নামতে হয়, সনদের জন্যও নামতে হয় মাঠে।’
এভাবে শহীদ সরোয়ার জাহান মাসুদের মা বিবি কুলসুম, ওয়াকিল আহমেদ সিহাবের মা মাহফুজা আক্তার, ছাইদুল ইসলামের মা রাহেনা বেগম স্মৃতিচারণকালে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ফেনী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. রুবাইয়াত বিন করীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাসরীন আক্তার।
রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল,জামায়াতে ইসলামীর জেলা সহকারী সেক্রেটারি এড.জামাল উদ্দিন,গণঅধিকার পরিষদের জেলা সদস্য সচিব রেজাউল করিম সুজন,এবি পাটির জেলা আহবায়ক আহসান উল্লাহ খেলাফত মজলিসের জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজ উল্যাহ আহম্মাদী।
এসময় তারা বলেন, আমরা জুলাই গণহত্যার নির্মমতা ভুলতে বসেছি। অনেকেই তখন চিকিৎসা নিতে পারেনি। মায়েরা ভালো করে সন্তানের মুখ দেখতে পারেনি। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। বিচারে কোনো অজুহাত মেনে নেওয়া হবে না।
তারা আরও বলেন, ‘খুনি ফিরে আসার মহাপরিকল্পনা করছেন। আমরাও প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছি। জুলাই ও বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’