স্থানীয়দের দাবি, অল্প দামে গরু দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিদের তুলে দিচ্ছেন ভারতীয় নাগরিকরা।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ১১ মাসের শাসনামলে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তবে সম্প্রতি নিজেদের অপরাধ ঢাকতে সীমান্তের হত্যাকাণ্ডের কৌশল পরিবর্তন করেছেন তারা। এখন গুলি করে নয় বরং বৈদ্যুতিক শক কিংবা অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার পর পদ্মা নদীতে ফেলে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশিদের মরদেহ।
সবশেষ শনিবার (১ আগস্ট) চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাসুদপুর সীমান্তে মাছ ধরতে গেলে দুই বাংলাদেশিকে অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পর ফের শুরু হয় আলোচনা।
এলাকাবাসী জানান, বিএসএফ ওঠিয়ে নিয়ে যায় এরপর অ্যাসিড ঢেলে, বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয়।
স্থানীয়রা বলছেন, ভারতীয় নাগরিকদের আঁতাত করে সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি গরু চোরাকারবারি চক্র। তারা এলাকার গরীব-অসহায় ব্যক্তিদের টার্গেট করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে গরু আনতে পাঠায়। এছাড়া অল্প দামে গরু দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে বাংলাদেশিদের বিএসএফের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। কিন্তু ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায় চোরাকারবারি ও ভারতীয় নাগরিকরা।
স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশের ভেতরে এসে বিএসএফের সদস্যরা বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যায়। নির্মম নির্যাতন করে, মরদেহ গুম করে ফেলে।
আরও পড়ুন:
মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মো. সমির উদ্দিন বলেন, ‘তারা আমাদের মূল্যায়নই করছে না। আমাদের হেয় করে দেখছে। অথচ কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।’
নৌ পুলিশের রাজশাহীর গোদাগাড়ী জোনের পরিদর্শক তৌহিদুর রহমানের কাছ থেকেও মিলেছে বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা।
গোদাগাড়ী নৌ পুলিশ পরিদর্শক (রাজশাহী জোন) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘সবুর নামে একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে রাজশাহীতে। তার গায়ে গুরুতর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কালকে পাওয়া গেছে সেলিম রেজা ও শরীফুল। এদের মধ্যে শরীফুলের গায়ে ফোসকা জাতীয় কিছু দেখা গেছে। আর সেলিম রেজার গায়ে ধারালো অস্ত্রের জখম পাওয়া গেছে।’
গত ১২ দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে চার জনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। তাই এসব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত চান স্থানীয়রা।